মহানবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সা.) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব এ কথায় পৃথিবীবাসীর প্রায় সবাই একমত। তাঁর জন্মকে কেন্দ্র করে অনেক আশ্চর্যজনক কাজের জন্ম হয়েছে, যা সব জাতিকে বিমোহিত করেছে এবং তৎকালীন সময়ে গোটা বিশ্বে তা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল; সৃষ্টি হয়েছিল বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনাও। তাঁর পবিত্র জন্মের পর তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত কা’বা শরীফ দুলতে থাকে। এই দৃশ্য দেখে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা তথা গোটা আরব জাহানের মানুষেরা রাসূলুল্লাহ্ (সা.)’র জন্ম সম্পর্কে প্রথমে জানতে পারে (সিরাতে হালবিয়া, নবী (সা.)’র আবির্ভাব অধ্যায়)। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যার স্মরণ সব জাতি সব যুগে করেছে। তিনি সেই মহামানব, যার নাম পবিত্র ইঞ্জিল ও তাওরাত শরীফে উল্লেখ আছে। সেখানে তাকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘আহমদ’ নামে আর কুরআনে পাকে ‘মুহম্মাদ’ নামে। (তাফসিরে ইবনে কাসির, খ– ২, পৃষ্ঠা ৩২৪)
মহানবী (সা.) যে রাতে জন্মগ্রহণ করেন, সেই রাতে পারস্যের রাজ প্রাসাদে প্রবল ভূকম্পনের সৃষ্টি হয়, যার ফলে তৎক্ষণাৎ সেই প্রাসাদের ১৪টি গম্বুজ ভেঙে পড়ে। এই নিদর্শনের মাধ্যমে তাদের ১৪ জন বংশধর ক্ষমতাবান হওয়ার ইঙ্গিত প্রদান করা হয়। আর এই ১৪ জনের মধ্যে পরবর্তীতে মাত্র ৪ বছরে ১০ জন শাসক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। আর বাকী শাসকরা ইসলামের চতুর্থ খলীফা হযরত উমর (রা.)’র শহীদ হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। মহানবী (সা.)’র জন্মের দিন পারস্য তথা ইরানের আগুন নিভে যায়, যা হাজার বছর ধরে প্রজ্জ্বলিত ছিল। [বায়হাকি, দালাইলুন নবুয়্যাহ্ (প্রথম খ-) পৃ. ১২৬]
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ (সা.) ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহর আমার প্রতি সম্মান হলো, আমি খাত্নাবিশিষ্ট অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি, যাতে আমার লজ্জাস্থান কেউ না দেখে। (মু’জামে আওসাত, হাদীস নং- ৬১৪৮)
অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের মতে, যেহেতু নবী করীম (সা.) ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে জন্মগ্রহণ করেন, সেহেতু এই দিনটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যম-িত। বিশেষত দু’টি কারণে ১২ রবিউল আউয়াল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। প্রথমত, সব ইতিহাসবিদের ঐকমত্য বর্ণনা মতে, এই দিনেই মহানবী (সা.) পৃথিবীবাসীকে কাঁদিয়ে ওফাত লাভ করেন। দ্বিতীয়ত, প্রসিদ্ধ অভিমত অনুযায়ী, এই ১২ রবিউল আউয়াল তারিখেই মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। [সিরাতে ইবনে হিসাম (খ- ১) পৃষ্ঠা- ১৫৮]
মহানবী হযরত মুহম্মাদ (সা.) এর জন্মদিন হিসেবে সোমবার সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই। কারণ, জীবন চরিতকাররা সবাই একমত যে রবিউল আউয়াল মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে সোমবার দিন নবী মুহম্মাদ (সা.)-এর জন্ম হয়েছিল। এই সোমবার ৮ অথবা ৯ কিংবা ১২ তারিখ এটুকুতেই হিসাবের পার্থক্য রয়েছে মাত্র। আমাদের উপমহাদেশে সুদীর্ঘকাল হতেই ১২ রবিউল আউয়াল মহানবী (সা.)-এর জন্মদিন হিসেবে পালন হয়ে আসছে। তবে ১২ রবিউল আউয়াল যে মহানবী (সা.)-এর ওফাত দিবস তাতে সব ঐতিহাসিকই ঐকমত্য পোষণ করেছেন। (সূত্র: ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
মহানবী (সা.) কেবল তার অনুসারীদেরই নন, জাতি-ধর্ম, বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের আদর্শ ও পথ প্রদর্শক এবং তিনি বিশ্বমানবের মহান শিক্ষক ও অনুপম আদর্শও বটে। মানবেতিহাসের এক যুগসন্ধিকালে, অন্ধকারতম সময়ে তিনি মহান আল্লাহর বাণী নিয়ে অবতীর্ণ হন। তাঁর উদাত্ত আহ্বান, নিষ্ঠাপূর্ণ কর্মসাধনা, উচ্চতম নীতি আদর্শ ও অমলিন পবিত্র-মাধুর্যের মাধ্যমে তিনি অল্প দিনে এক আলোকোজ্জ্বল ও সর্বোন্নত জীবনব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেন। তিনিই অজ্ঞতা, কুসংস্কার এবং অনাচার, পাপাচার ও বিশ্বাসহীনতার কলুষ দূরীভূত করে শান্তি, সভ্যতা, নিরাপত্তা ও মানবিক মর্যাদার এক নতুন পথ রচনা করেন। বিশ্বাস, প্রজ্ঞা ও মানবিক গুণাবলী সমৃদ্ধ নয়া সভ্যতার স্থপতি হিসেবে তিনি কেবল আরব জনগোষ্ঠীর নয়, তামাম বিশ্বের মানবম-লীর মুক্তির দিশা দান করেন। তিনি একাধারে একটি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, একটি জাতির নির্মাতা এবং একটি অতুলনীয় সভ্যতার ¯্রষ্টা। তাই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, সাইয়্যেদুল র্মুসালিন ও খাতামুন্ নাবিয়্যীন।
আজকের বিশ্বসভ্যতা সবচেয়ে বেশি ঋণী ইসলাম ও মুসলমানদের কাছে। এ সভ্যতার যা কিছু সুন্দর, যা কিছু কল্যাণকর, যা কিছু মঙ্গলজনক তার পেছনে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর আদর্শ, শিক্ষা, নির্দেশনার অনিবার্য ভূমিকা। শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও মানবিক বিকাশের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের আদর্শ অনস্বীকার্য। বর্তমান বিশ্বে মানুষ যখন ধর্মবিমুখ, বস্তুবাদী দর্শনের কবলে পড়ে যুদ্ধ-সংঘাত-সন্ত্রাস ও অশান্তির অনলে পুড়ছে, যখন ক্ষমতা, সম্পদ ও ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে নিজের সর্বনাশকে ত¦রান্বিত করছে তখন একমাত্র ইসলাম ও বিশ্বনবী (সা.)-এর শিক্ষাই তাকে সর্বোত্তম সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
মহানবী (সা.)-এর জন্মদিন হওয়ার কারণে প্রতি সোমবার সিয়াম (রোযা) পালন করা মুস্তাহাব। নবী (সা.)কে সোমবারের রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমাকে নবুওয়াত দান করা হয়েছে (সহিহ্ মুসলিম: ১১৬২)। পূর্বোল্লিখিত হাদীসের আলোকে উম্মতে মুহম্মদী হিসেবে আমাদের করণীয় হলো এই দিনে সকল মুসলিমের রোযা পালন করা, তাঁর প্রতি অধিক পরিমাণে দরূদ ও সালাম প্রেরণ করা। অন্য এক হাদীসে নবী করীম (সা.) বলেন, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমলনামা আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হয়। সুতরাং রোযা অবস্থায় আমার আমলনামা উপস্থাপন করা হোক, এটা আমি পছন্দ করি।’ (সুনানে তিরমিযি: ৭৪৭)। তাই মহানবী (সা.)-এর জন্মের দিনে নফল রোযা রাখা প্রকৃত নবী প্রেমের বহিঃপ্রকাশ। আর যে কথাটিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো, মহানবী (সা.)-এর জন্মের ঘটনার চেয়েও তাঁর আদ্যোপান্ত জীবনাদর্শ আমাদের জীবন চলার পথে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাথেয়। আর নবী করীম (সা.)-এর জন্মের বিষয়টি একান্ত তাঁর ব্যক্তিগত। কিন্তু তাঁর সিরাত বা জীবনাদর্শ সব যুগের জন্য, সব মানুষের জন্য; সর্বোপরি বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য সর্বদা অনুসরণীয়-অনুকরণীয়।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, নবী (সা.)-এর সময়, খোলাফায়ে রাশেদিনের সময় এমনকি তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীদের সময়েও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে কোনো উৎসবের প্রচলন ছিল না। জমহুর মুহাদ্দিসীনে কিরাম, ফিকহ্বিদগণ এবং ঐতিহাসিকগণ এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে মুসলমানদের প্রধান দুই ঈদোৎসবের বাইরে কোনো দিনকে সামাজিকভাবে উদযাপন শুরু হয় হিজরি ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে। সর্বপ্রথম ৩৫২ হিজরিতে (৯৬৩ খ্রি.) বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফার প্রধান প্রশাসক ও রাষ্ট্রের প্রধান নিয়ন্ত্রক বনী বুয়াইহির শিয়া শাসক মুইজলি দীনিল্লাহ্ ১০ মুহররম আশুরাকে শোক দিবস ও জিলহজ্জ মাসের ৮ তারিখ ‘গাদীরে খুম’ দিবস হিসাবে পালন করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশে এই দুই দিবস সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সাথে পালন করা হয়। ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করার ক্ষেত্রেও শিয়াগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
ইতিহাসবেত্তাদের মতে, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে মিশরের ফাতেমীয় শাসকগণ মিলাদুন্নবী উদযাপন করতেন এবং ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন শুরু হয় হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে। রাসূল (সা.), হযরত আলী (রা.), হযরত ফাতিমা (রা.), ইমাম হাসান (রা.) ও ইমাম হুসাইন (রা.) এর জন্মোৎসব উদযাপনের মূল প্রবর্তক ছিলেন খলিফা মুইজলি দীনিল্লাহ্।
ইবনে জারীর সূত্র মতে, আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে বাদশাহ্ হারুনুর রশীদের মাতা খায়জুরান বিবি ১৭৩ হিজরিতে মদিনা শরীফে নবী (সা.) এর রওজা মোবারক যিয়ারত করার ও সেখানে দরূদ ও দু’আ পাঠ করার যে ব্যবস্থা রয়েছে, ঠিক সেভাবে নবী (সা.) মক্কায় যে ঘরে ভূমিষ্ট হয়েছিলেন, সেই ঘরটির যিয়ারত ও সেখানে দু’আ করার প্রথা সর্বপ্রথম চালু করেন। পরবর্তীকালে ১২ রবিউল আউয়ালে ঐ নারীর নেতৃত্বে তীর্থযাত্রীগণ প্রতিবছর নবী (সা.) এর জন্মদিবস ধরে নিয়ে ঐ ঘরে আনন্দোৎসব পালন করা শুরু করেন।
মুসলিমদের মাঝে এই জন্মবার্ষিকী চালু হওয়ার পর আফজাল ইবনু আমিরুল জাইশ (৪৮৫-৫১৫ হি.) মিশরের ক্ষমতা দখল করে এই মিলাদুন্নবীসহ আরও ৫টি [আলী (রা.), ফাতিমা (রা.), হাসান (রা.), হুসাইন (রা.) ও জাইনুল আবেদিন (রা.)] জন্মবার্ষিকীর প্রথা বাতিল করে দেন। ৫১৫ হিজরিতে শিয়া খলিফা আমির বিল আহকামিল্লাহ্ তা পুনরায় চালু করেন। পরবর্তীতে কুরআন সুন্নাহর অনুযায়ী গাজী সালাহউদ্দীন আইয়ুবি (৫৩২-৫৮৭ হিজরি) ঈদে মিলাদুন্নবীসহ সকল জন্মবার্ষিকী উৎসব বন্ধ করে দেন।
পরবর্তীতে যিনি ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রবর্তক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ তিনি হলেন, ইরাক অঞ্চলের ইরবিল প্রদেশের শাসক আবু সাঈদ মুজাফফর উদ্দীন কুকুবুরী। তিনিই প্রথম সুন্নীসহ বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রবর্তন করেন। সিরাতুন্নবী গবেষক ও ঐতিহাসিকরা তাকেই মিলাদুন্নবীর প্রকৃত উদ্ভাবক বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ তিনিই প্রথম এই উৎসবকে বৃহৎ আকারে উদযাপন শুরু করেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই উৎসবের প্রচলন করেন। সে হিসেবে জানা যায়, ৬০৪ হিজরি থেকে আনুষ্ঠানিক মিলাদ উদযাপন শুরু হয়। মিলাদের উপর সর্বপ্রথম ‘কিতাবুল তানভীল ফি মাউলিদিস সীরা-জিল মুনীর’ নামক গ্রন্থ রচনা করেন স্পেনের অধিবাসী আবুল খাত্তাব ওমর ইবনে হাসান ইবনে দেহিয়া আল কালবি। যিনি তার ৯০ বছরের দীর্ঘ জীবনে ইসলামি বিশ্বের সর্বত্র ভ্রমণ করেন এবং ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের সৃষ্টি করেন।
ভারতীয় উপমহাদেশে মিলাদুন্নবী প্রচলনকারীরা ছিলেন শিয়া মতাবলম্বী। ইসলামী অনুশাসনে মিলাদ, মিলাদুন্নবী প্রচলনকারী হলেন ফাতেমীয় শাসক শিয়া মতাবলম্বী মুয়ীজলি দীনিল্লাহ্ আর ভারতীয় উপমহাদেশে মিলাদ প্রচলনকারী হলেন মোগল স¤্রাট হুমায়ুন ও স¤্রাট আকবরের মাতা তাদের অভিভাবক বৈরাম খাঁ। স¤্রাট জাহাঙ্গীরের রাষ্ট্রদূত মোগল শেষ স¤্রাট বাহাদুর শাহের মাধ্যমে এই উপমহাদেশে সুন্নীদের মাঝে মিলাদুন্নবীর প্রচলন হয়। ফলে শিয়া মতাদর্শী মিলাদ ও মিলাদুন্নবীর আনুসাঙ্গিক ব্যাপারগুলো সুন্নীদের মধ্যে প্রচলিত হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের পক্ষাবলম্বীরা তাদের মতের সপক্ষে দলিল হিসেবে সূরা আলে ইমরানের ৮১নং আয়াতটি উল্লেখ করেন। এ আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন: ‘হে প্রিয় রাসূল! আপনি স্মরণ করুন ঐ দিনের ঘটনা যখন আল্লাহ্ পাক আম্বিয়ায়ে কিরামদের নিকট প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে, তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের কাছে যা আছে তার প্রত্যয়নকারীরূপে যখন একজন রাসূল আসবেন তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে।’
দলিল হিসেবে তারা সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াত দুটিও উল্লেখ করেন। এ আয়াতে কারিমায় আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন: ‘হে মানবকুল! তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং অন্তরসমূহের বিশুদ্ধতা, হেদায়েত এবং রহমত ঈমানদারদের জন্য। হে নবী, আপনি বলুন, আল্লাহরই অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া প্রাপ্তিতে তারা যেন আনন্দ প্রকাশ করে। এটা তাদের সমস্ত ধন দৌলত সঞ্চয় করা অপেক্ষা শ্রেয়।’
যাহোক, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের পক্ষে বিপক্ষে নানা বিতর্ক থাকার পরেও ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে এ দিনটি কালক্রমে উৎসবে রূপ নিয়ে প্রতিবছর সাড়ম্বরে পালিত হয় এবং বাংলাদেশসহ কতিপয় মুসলিম দেশে এদিনটি সরকারি ছুটির দিন। আর বর্তমান বাস্তবতায় মহানবী (সা.)-এর পথ অনুসরণ করলে, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিজীবনে তাঁর আদর্শের প্রয়োগ ঘটানো গেলে, পৃথিবীর সর্বক্ষেত্রে শান্তির সুবাতাস বইবে আর পরিলক্ষিত হবে চির শান্তিময় এক সুখী-সমৃদ্ধ নতুন বিশ্ব।