গৎবাঁধা চিন্তা থেকে বেরিয়ে
সৃজনশীল হতে হবে
ওয়াল নিউজ ডেস্ক
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যয়কে ভিত্তি ধরে সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংস্কার কর্মসূচি শুধু গ্রহণই নয়, তা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশও (মার্চিং অর্ডার) দিয়েছেন। একই সঙ্গে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জনগণের সন্তুষ্টি অর্জন করার কথা বলেছেন তিনি।
বুধবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন ড. ইউনূস। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে রয়েছেন ২০ জন উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা মোট ছয়টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিজের হাতে রেখেছেন। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই প্রথম সচিব সভা। এর আগে নিজের অধীন থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।
সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তার একটি ব্রিফ পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। তাতে ড. ইউনূস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।’ সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত নেওয়ারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত আমাদের উপহার দিয়েছে, তার উপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে। এবং সৃষ্টিশীল, নাগরিক-বান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে- যা নিয়মিত মূল্যায়ন বা পরিবীক্ষণ করা হবে।’