• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

 প্রতিদিন জাতীয়  গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে সিলেটের আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

The Wall News.Com
প্রকাশিত নভেম্বর ৫, ২০২৪
 প্রতিদিন জাতীয়  গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে সিলেটের আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

ওয়াল নিউজ ডেস্ক


সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর ৭ নম্বর গ্যাস কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। এ সময় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ৭ নম্বর কূপ থেকে আজ (সোমবার) থেকে দৈনিক আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে।
এর আগে ২২ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর তেলের পুরোনো কূপ (সিলেট-৭নং কূপ) সংস্কার করতে গিয়ে দুই স্তরে নতুন গ্যাসের সন্ধান মেলে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুই দফায় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে এক হাজার ২০০ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরাতন গ্যাসকূপ সিলেট-৭ নম্বরে জুলাই মাস থেকে অনুসন্ধান চলে। ১৪ অক্টোবর কূপের ২০১০ মিটার গভীরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে পরীক্ষামূলকভাবে এক সপ্তাহ গ্যাস উত্তোলন করা হয়। পরবর্তীতে ওই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়। প্রতিদিন সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে জৈন্তাপুরের হরিপুর সিলেট-৭ নম্বর কূপে তেল উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা হয়। এরপর তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এবার পুরোনো কূপে দুটি লেয়ারে গ্যাসের সন্ধান মেলে। সিলেট থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে আসছিল। এখন সেটি আরও বাড়ছে।
সিলেটে ১৪টি কূপে খনন ও গ্যাস উত্তোলন করে দেশীয় তেল গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি বাপেক্স। এরমধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে দুটি কূপে, গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা তিনটিতে, রশিদপুর সাতটি ও বিয়ানীবাজার দুটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন অব্যাহত আছে।
এর মধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে ১৯৫৫ সালে নয়টি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে দুটিতে গ্যাস পাওয়া যায় এবং ১৯৬১ সালে এই কূপ দুটি উৎপাদনে যায়। গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা ১৯৬২ সালে সাতটি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে তিনটিতে গ্যাসের সন্ধান মেলে এবং ১৯৮৩ সালে উৎপাদনে যায়। রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে ১৯৬০ সালে ১১টি কূপ খনন করে সাতটিতে গ্যাস উৎপাদনে যায় ১৯৯৩ সালে। বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডে ১৯৮১ সালে দুটি কূপ খনন করে দুটিতেই গ্যাসের সন্ধান মেলে এবং ১৯৯৯ সালে উৎপাদনে যায়।
এছাড়াও ১৯৫৯ সালে ছাতক গ্যাস কূপে অনুসন্ধান করে একটি কূপের সন্ধান মেলে। তবে ১৯৬০ সালে উৎপাদনে গিয়ে সেটি স্থায়িত্ব পায়নি, এখনও বন্ধ রয়েছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) প্রকল্প পরিচালক ও ডিজিএম আবদুল জলিল প্রামাণিক বলেন, এসব কূপের বাইরেও অনেক কূপ খনন করা হয়েছে। যেগুলো থেকে গ্যাস পাওয়া যায়নি। তবে সিলেটের হরিপুর ৭নং কূপ সংস্কার করতে গিয়ে দুই স্তরে গ্যাসের সন্ধান মেলে। সর্বশেষ ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে প্রতিদিন সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট করে উত্তোলনযোগ গ্যাসের সন্ধান মেলে। এটি আজ (সোমবার) জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়।