• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

৩রা নভেম্বর, শোকাবহ জেলহত্যা দিবস

The Wall News.Com
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০২৪
৩রা নভেম্বর, শোকাবহ জেলহত্যা দিবস

ওয়াল নিউজ ডেস্ক


আজ ৩রা নভেম্বর, শোকাবহ জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভোরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

জাতীয় এই চার নেতাকে শুধু গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, কাপুরুষের মতো গুলিবিদ্ধ দেহকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছিল। প্রতি বছরের মতো আজ রবিবারও শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে জাতীয় চার নেতাকে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয় চার নেতাকে তাদের সরকারে যোগদানের প্রস্তাব দেয়; কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর এই জাতীয় চার নেতা সেই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। এ কারণে তাদের নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত জেল হত্যা মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে ১৫ সাবেক সেনা কর্মকর্তার শাস্তি এবং অন্য পাঁচ জনকে খালাস দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন জনের মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে হত্যার কিছুদিন পরই ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাসের বর্বর এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন। ওইদিন তাদের জেলখানার অভ্যন্তরে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থেকে এ জাতীয় চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে এ সরকার গঠিত হয় ও শপথ গ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান। এ সরকারের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেস্বর বিজয় অর্জিত হয়। শুধু মুক্তিযুদ্ধই নয়, স্বাধীনতার জন্য সব আন্দোলন-সংগ্রামেও এ চার নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

আজকের এই দিনে জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে তাঁদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।