• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও সমাবেশ করবে জাপা

The Wall News.Com
প্রকাশিত নভেম্বর ২, ২০২৪
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও সমাবেশ করবে জাপা

বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

প্রতিহতের ঘোষণা ছাত্র অধিকার পরিষদের
কাকরাইলে সমাবেশ নিষিদ্ধ করলো পুলিশ

ওয়াল নিউজ ডেস্ক


রাজধানী ঢাকার বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির সমাবেশের ঘোষণা ঘিরে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোনো মূল্যে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়ার পর একটি পক্ষ সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে কাকরাইল এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার পর শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও শনিবার (আজ) কাকরাইলে জাতীয় পার্টি সমাবেশ করবে। এদিকে, জাতীয় পার্টিকে কোনো সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতার ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে রাজধানীর কাকরাইল ও এর আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। শুক্রবার ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সমাবেশের ডাক দিয়ে জিএম কাদের শুক্রবার বলেছেন, জীবন যায় যাক, তবু যে অন্যায় ও বৈষম্য হচ্ছে, তার প্রতিবাদ করব। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও শনিবার (আজ) কাকরাইলে জাতীয় পার্টি সমাবেশ করবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ব্যানারে প্রথমে হামলা ও পরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টি বলেছে, ওই সময় নেতা-কর্মীরা শনিবারের সমাবেশের প্রস্তুতি সভা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ২ তারিখ (২ নভেম্বর, শনিবার) যে কর্মসূচি দিয়েছি, সে কর্মসূচি চালু থাকবে। কেউ ভয় পাবেন না যে যেখানে আছেন। …আমরা মরতে আসছি, আমরা মরতে চাই। কত লোক মারবেন ওনারা, আমরা সেটা দেখতে চাই। মনে রাখবেন, ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। হাত দিয়ে প্রতিবাদ করতে না পারলে মুখ দিয়ে করো। মুখ দিয়ে না পারলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করো। আমাদের সেটা করতে হবে। তার জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।’
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো অপরাধ করিনি। আমাদের জোর করে অপরাধী করা হচ্ছে। কেন করা হচ্ছে, আমরা জানি না।’ কেন জাতীয় পার্টি ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তার উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি জাতীয় পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক দল। বারবার আমাদের কবরস্থ করার পরও আমরা কবর থেকে উঠে এসেছি। কেউ আমাদের ধ্বংস করতে পারেনি। যেহেতু আমরা সহাবস্থানের রাজনীতি করি, আমরা দখলদারি করিনি, সন্ত্রাসের রাজনীতি করি না, হাট-মাঠ-ঘাট দখল করিনি, মানুষকে অত্যাচার-দলীয়করণ করিনি। আমরা মানুষকে সুশাসন দিয়েছি, উন্নয়ন দিয়েছি, সংস্কার দিয়েছি, গণতান্ত্রিক অধিকার দিয়েছি। মানুষ তা স্মরণ করে।’

জাতীয় পার্টিকে প্রতিহত করার ঘোষণা ছাত্র অধিকার পরিষদের: জাতীয় পার্টিকে কোনো সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতার ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘শনিবার জাতীয় পার্টিকে সমাবেশ করতে দেওয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার আরেকটি চক্রান্ত।’ তিনি বলেন, ‘গতকাল আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জড়ো হয়েছিল। আমরা কাকরাইলে পৌঁছামাত্রই আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।’
মোল্লা আরো বলেন, ‘জাতীয় পার্টি আগামীকাল সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ক্যাডার বাহিনী নিয়ে এসে সমাবেশ করবে। আমরা বারবার আলটিমেটাম দিচ্ছি যেন ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিষিদ্ধ করা হয়।
তারা বিভিন্ন রূপে ফেরার চেষ্টা করছে। তাদের প্রতি বর্তমান সরকারের অবস্থান কী আমরা তা জানতে চাই। ডিএমপি কমিশনার কিভাবে এই দোসরদের সমাবেশ করার অনুমতি দেন আমরা জানতে চাই।’ জাতীয় পার্টির হামলার অভিযোগ তুলে ছাত্রনেতা মশিউর রহমান বলেন, ‘গতকাল আমাদের ওপর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ একত্রে হামলা করে। আমার হাতে এখনো ব্যান্ডেজ করা। তারা নাকি আবার আগামীকাল সমাবেশ করবে। এটা কি মগের মুল্লুক পেয়েছে? তারা হামলাও করবে আবার সমাবেশও করবে?’ তিনি বলেন, ‘গতকাল তাদের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে ছাত্র, শ্রমিক, জনতার কোনো সম্পর্ক নেই। বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে।’

কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ: রাজধানীর কাকরাইল ও এর আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। শুক্রবার ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গণ-বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি উ™ূ¢ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং- ওওও/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামীকাল শনিবার (আজ) রাজধানীর পাইওনিয়ার রোডের ৬৬ নং ভবন, পাইওনিয়ার রোড, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।