ওয়াল নিউজ ডেস্ক
সিলেটের ওসমানীনগরের পাঁচপাড়া গ্রামের জহির উল্যার ছেলে আব্দুল জলিলকে অপহরণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়। এরপর লাশ সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ জন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হক।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার ভাড়েরা গ্রামের মৃত আনহার মিয়ার ছেলে কামরান আহমদ (২৮), কাদিপুর গ্রামের তছিম মিয়ার ছেলে ছালেহ মিয়া (২৫) ও তার স্ত্রী তামান্না আক্তার মাইশা। নিখোঁজের চার দিন পর বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচ পাড়া গ্রামের মৃত জহির উল্যার ছেলে আব্দুল জলিল গত রোববার বিকালে স্বর্ণ ক্রয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। আত্মীয় স্বজনসহ সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়। এ সময় সন্দেহজনক কামরান আহমদ, সালেহ মিয়া ও তামান্নাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞসাবাদে তারা পুলিশকে জানায় ঘটনার দিন রাতেই তারাসহ আরো কয়েকজন মিলে আব্দুল জলিলকে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাজপুর বাজারস্থ কামরান আহমদ এর মুদি দোকান থেকে স্বর্ণ বিক্রয়ের কথা বলে কৌশলে অপহরণ করে কাদিপুর গ্রামের ছালেহ মিয়া ও তামান্না আক্তার ওরফে মাইশাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুল জলিলকে ধারালো চাকু দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে লাশ গুম করার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি পাটের বস্তা ও রশি সংগ্রহ করা হয়। গভীর রাতে পার্শবর্তী মৃত আবরুছ মিয়ার বাড়ির পূর্ব দক্ষিণ পাশে পরিত্যক্ত সেফটিক ট্যাংকে রেখে সø্যাব দিয়ে আটকে রাখা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্য মতে বুধবার দুপুরে পুলিশ ঐ স্থান থেকে আব্দুল জলিলের লাশ উদ্ধার করে। লাশের গায়ে একাধিক স্থানে ধারলো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি ছালেহ মিয়া ও তামান্না আক্তারের দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদের বসতঘর থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু এবং আব্দুল জলিলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্য রাসেদুল হক বলেন, আব্দুল জলিল হত্যাকান্ডে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের আবরুছ মিয়ার পরিত্যক্ত সেফটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দি ও রশি দিয়ে বাধা অবস্থায় আব্দুল জলিলের (৪৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে রোববার সন্ধ্যার পর থেকে আব্দুল জলিল নিখোঁজ ছিলেন।