• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেট চেম্বারের ‘গোপন কমিটি’ নিয়ে অসন্তোষ, আল্টিমেটাম

The Wall News.Com
প্রকাশিত আগস্ট ২৭, ২০২৪

ওয়াল নিউজ ডেস্ক:
সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কমিটি নিয়ে জেলার ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দকে পদত্যাগ করে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদ গঠনের দাবি নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। ‘গোপন কমিটি’ বাতিলের দাবিতে তারা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে সকল পরিচালক পদত্যাগ না করলে চেম্বার ভবন ঘেরাও করে তালা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অস্থিতিশীল এই অবস্থায় পাঁচ পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। অসুস্থতাজনিত কারণে একজন পরিচালককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন সভাপতি তাহমিন আহমদ।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। আগের কমিটির সভাপতি তাহমিন আহমদ পুণরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। আর সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে এমদাদ হোসেন ও সহসভাপতি এহতেশামুল হক চৌধুরী নির্বাচিত হন। পর্ষদের দায়িত্বশীলদের দাবি, ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল। ওই সময় তিন ক্যাটাগরিতে ২৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। পরে ২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে ২৩ পদে সমান সংখ্যক প্রার্থী হওয়ায় তাদেরকে ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ছিল নির্বাচনের ব্যাপারে তারা কিছুই জানতেন না। গোপনে সমঝোতার এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবার নির্বাচনী তফশিল সংবাদপত্রে প্রকাশ ও সদস্যদের অবগতির জন্য প্রচার করা হলেও সেই পন্থা অবলম্বন করা হয়নি। এরপর থেকে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের দেখা দেয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সিলেট চেম্বারের সভাপতির পদত্যাগ ও পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি তুলেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকও করেন। চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদকে কয়েক দফা তারা অনুরোধ করলেও তিনি পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
এদিকে, ব্যবসায়ীদের অসন্তোষের মুখে গত বৃহস্পতিবার পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন আলীমুল এহসান চৌধুরী। এরপর গত শনিবার সিনিয়র সহসভাপতি এমদাদ হোসেন, সহসভাপতি এহতেশামুল হক চৌধুরী, পরিচালক, জহিরুল হক চৌধুরী শিরু ও খন্দকার ইশরার আহমদ রকি পদত্যাগ করেন।
তাদের পদত্যাগের পর গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানায় সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভাপতি তাহমিন আহমদ অসুস্থতার কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগ। তাই সিনিয়র পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদ সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। ইতোমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে ‘গোপন কমিটি’ আখ্যা দিয়ে গতকাল রবিবার শহিদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছেন ব্যবসায়ীরা। সর্বস্তরের ব্যবসায়ীর ব্যানারে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। মানবন্ধন থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেন ব্যবসায়ীরা।
সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যান পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান রিপন জানান, কোন ধরণের তফশিল ছাড়াই প্রহসনের কমিটি হয়েছে সিলেট চেম্বারে। ব্যবসায়ীদের অন্ধকারে রেখে ষড়যন্ত্র করে হঠাৎ করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কাদেরকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল, তফশিল কিভাবে ঘোষণা হয়েছিল তারও কোন জবাব দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। তাই ব্যবসায়ীরা এই কমিটি বাতিলের দাবিতে মাঠে নেমেছেন।