• ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আশুলিয়ায় শ্রমিক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৪

The Wall News.Com
প্রকাশিত অক্টোবর ১, ২০২৪
আশুলিয়ায় শ্রমিক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৪

ওয়াল নিউজ ডেস্ক


সাভারের আশুলিয়ায় বিক্ষোভের জেরে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও চার শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২৯ জন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত পাঁচটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী গুলিবিদ্ধ এক শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রায় এক ঘণ্টা আগে তিন শ্রমিককে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে কাউসার হোসাইন খান (২৭) মারা গেছেন। তিনি আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার ম্যাঙ্গোটেক্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিক। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ এলাকায়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকার মণ্ডল গ্রুপের সামনে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন আশুলিয়ার ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক হাবীব ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো কারখানার শ্রমিক নাজমুল হাসান। তবে এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ বাকি দুইজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শ্রমিকরা জানায়, সকালে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মিটিং চলছিল। এ সময় সমঝোতা না হওয়ায় শ্রমিকরা কারখানার বাইরে অবস্থান নেয়। পরবর্তী সময়ে অন্য কারখানার শ্রমিক সেখানে জড়ো হতে থাকে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে শ্রমিকরা র‌্যাব ও পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিচার্জ শুরু করেন। পরে শ্রমিকরা আরও উত্তেজিত হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গুলি চালায়। এ সময় দুজন গুলিবিদ্ধ হলে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় পিএমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে অনেকে আহত হয়েছেন।
ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক মো. সুমন বলেন, ‘সকালে কারখানায় সবাই কাজ করছিল। আমাদের কারখানায় কোনো ধরনের আন্দোলন হয়নি। তবে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানার সামনে আন্দোলন শুরু করলে আমাদের শ্রমিকরা সংহতি জানিয়ে মণ্ডলের সামনে যায়। সেখানে আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যোগ দেয়। এ সময় শ্রমিকদের লাঠিচার্জ শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে গুলি ছুড়লে দুইজনের পায়ে গুলি লাগে। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতাল চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
পিএমকে হাসপাতালের অ্যাডমিন ম্যানেজার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে চারজনকে আহতাবস্থায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের পায়ে গুলি লেগেছে। চিকিৎসা চলছে।’
ন্যাচারাল ডেনিম কারখানার এইচআর অ্যাডমিন সবুজ হাওলাদার বলেন, ‘সকাল থেকেই শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছিল। হঠাৎ শ্রমিকদের কাছে গুজব আসে, পাশের মণ্ডল গার্মেন্টসের শ্রমিক মারা গেছে। এটা শুনেই সব শ্রমিক একসঙ্গে কারখানা থেকে বেরিয়ে মণ্ডল গার্মেন্টসের সামনে চলে যায়। পরে ওখানে কী ঘটেছে আমার জানা নেই।’