ওয়াল নিউজ ডেস্ক
হিজবুল্লাহ একটি আরবি ভাষার শব্দ, যার অর্থ ‘আল্লাহর দল’। এটি একটি শিয়া ইসলামি রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন। মূলত ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮২ সালে লেবাননে হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গোষ্ঠীটি লেবাননের শিয়া জনগণের মধ্যে বিশাল সমর্থন লাভ করে এবং এটি রাজনৈতিক, সামরিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয়।
প্রধান কে?
হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে পরিচিত হাসান নাসরাল্লাহ। তিনি ১৯৯২ সালে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নাসরুল্লাহ, যিনি একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত, তার নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ সামরিক সংঘাত ও রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
বিমান হামলায় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। পরে নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে শনিবার এক বিবৃতিতে জানায় হিজবুল্লাহ।
হিজবুল্লাহর কাজ
হিজবুল্লাহর কার্যক্রম কয়েকটি প্রধান দিক নিয়ে গঠিত। সামরিক কার্যক্রম: হিজবুল্লাহ প্রথমত ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল। এটি লেবাননের দক্ষিণ অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়েছে এবং ২০০০ সালে ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করে।
রাজনৈতিক অংশগ্রহণ: হিজবুল্লাহ লেবাননের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে এবং সেখানে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি দেশটির সরকারে অংশগ্রহণ করে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে ভূমিকা রাখে।
সামাজিক ও মানবিক সেবা: হিজবুল্লাহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অন্যান্য সামাজিক সেবার ক্ষেত্রেও কাজ করে। এটি লেবাননের শিয়া জনগণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, স্কুল ও সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: হিজবুল্লাহ ইরান ও সিরিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এটি আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে এবং বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সমর্থন পেয়েছে।
জিহাদ ও ধর্মীয় কার্যক্রম: সংগঠনটি ধর্মীয় মূলনীতির ভিত্তিতে কাজ করে এবং জিহাদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এটি শিয়াদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা প্রচার এবং ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা মোকাবেলার লক্ষ্যে কাজ করে।
হিজবুল্লাহ একটি বহুমাত্রিক সংগঠন, যা রাজনৈতিক, সামরিক, এবং সামাজিক কাজের মাধ্যমে লেবাননের শিয়া জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রধানত ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাজ করে, তবে এর কার্যক্রম রাজনৈতিক ও মানবিক ক্ষেত্রেও বিস্তৃত। শাহাদাত হাসান নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে সংগঠনটি লেবাননের সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।