ওয়াল নিউজ ডেস্ক
পরপর দুই দিনে লেবাননে হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত কয়েক শ যোগাযোগ ডিভাইস (পেজার, ওয়াকিটকি ও রেডিও) বিস্ফোরণের পর এবার দেশটিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির বেশ কয়েকটি এলাকায় এই হামলা চালায় ইসরায়েল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গত বৃহস্পতিবার জেজিন এলাকার মাহমুদিহ, কাসার আল-আরুশ এবং বিরকেত জাব্বুর শহর লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। লেবানিজ নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর এই হামলা অন্যতম ভয়াবহ।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো হিজবুল্লাহর প্রায় ১০০টি রকেট লঞ্চার নষ্ট করে দিয়েছে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য অবকাঠামোতে আঘাত করেছে। এসব হামলায় কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ‘হিজবুল্লাহকে চড়া মূল্য দিতে হবে। আমাদের সামরিক কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলবে।’
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ পেজার, ওয়াকিটকি ও রেডিও বিস্ফোরণ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে ভাষণ দিয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ পিছু হটবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দুই দফা বিস্ফোরণের ঘটনায় হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়া কী হবে, সে বিষয়ে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘যারা প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন, গাজার নামে যুদ্ধ করেছেন, তাঁদের সবার নামে বলছি, শত্রু নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তকেও বলতে চাই, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লেবানন এখানেই থামবে না। গাজা ও পশ্চিম তীরের মানুষকে সমর্থন দিয়ে যাবে লেবাননের প্রতিরোধ বাহিনী।’
লেবাননে ইলেকট্রিক হামলা প্রসঙ্গে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে ইসরায়েল। গত দুই দিনে দুই মিনিটে ৫ হাজার জনকে হত্যার চেষ্টা করেছে তারা। লেবানন শুধু নয়, বিশ্বের ইতিহাসেও এ ঘটনা নজিরবিহীন।’ পেজার ও ওয়াকিটকি হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘অনেক নিরপরাধ মানুষ ও শিশু এ হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার পেজারে বিস্ফোরক বসানো হয়েছিল।’
নাসরুল্লাহর ভাষণ প্রচারিত হচ্ছিল, সেই সময়ই বৈরুতে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, তারা হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করতে কাজ করছে। তবে লেবাননে ইলেকট্রনিক হামলার অভিযোগ এখনো স্বীকার করেনি ইসরায়েল।