ওয়াল নিউজ ডেস্ক
লেবাননে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহৃত যোগাযোগ ডিভাইস পেজার, ওয়াকিটকি ও রেডিও বিস্ফোরণের পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামি। তিনি বলেছেন, প্রতিরোধ অক্ষ এই হামলার দাঁতভাঙা জবাব দেবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিগত তিন দিনে লেবাননে হিজবুল্লাহ ব্যবহৃত শতাধিক পেজার, ওয়াকিটকি ও রেডিও বিস্ফোরণে ৩৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। হিজবুল্লাহ, লেবাননের গোয়েন্দাসহ অনেকেই এই হামলার পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। এমনকি নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব পেজার তৈরি করেছে ইসরায়েলি মালিকানাধীন একটি ছদ্ম আন্তর্জাতিক কোম্পানি। তবে ইসরায়েল এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি হিজবুল্লাহর প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহর কাছে পাঠানো এক বার্তায় বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে ইহুদিবাদী শাসকের হতাশা এবং ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিগগির প্রতিরোধ অক্ষ এসব হামলার দাঁতভাঙা জবাব দেবে।’
ইরানের নেতৃত্বে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি ও ইরাকের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসসহ মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তেহরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ে গঠিত হয়েছে প্রতিরোধ অক্ষ।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ পেজার, ওয়াকিটকি ও রেডিও বিস্ফোরণ হামলা জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে ভাষণ দিয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ পিছু হটবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দুই দফা বিস্ফোরণের ঘটনায় হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়া কী হবে, সে বিষয়ে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন, গাজার নামে যুদ্ধ করেছেন, তাঁদের সবার নামে বলছি, শত্রু নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তকেও বলতে চাই, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লেবানন এখানেই থামবে না। গাজা ও পশ্চিম তীরের মানুষকে সমর্থন দিয়ে যাবে লেবাননের প্রতিরোধ বাহিনী।’
লেবাননে ইলেকট্রিক হামলার প্রসঙ্গে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে ইসরায়েল। গত দুই দিনে দুই মিনিটে ৫ হাজার জনকে হত্যার চেষ্টা করেছে তারা। লেবানন শুধু নয়, বিশ্বের ইতিহাসেও এই ঘটনা নজিরবিহীন।’ পেজার এবং ওয়াকিটকি হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘অনেক নিরপরাধ মানুষ ও শিশু এই হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার পেজারে বিস্ফোরক বসানো হয়েছিল।’
নাসরুল্লাহর ভাষণ প্রচারিত হচ্ছিল, সেই সময়ই বৈরুতে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, তারা হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করতে কাজ করছে। তবে লেবাননে ইলেকট্রনিক হামলার অভিযোগ এখনো স্বীকার করেনি ইসরায়েল।