• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বনাথ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় এবার পদত্যাগে বাধ্য করা হলো ৩ সদস্যকে

The Wall News.Com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

ওয়াল নিউজ ডেস্ক

দীর্ঘদিনের অধ্যক্ষকে দায়িত্ব হস্তান্তরে বাধ্য করার পর এবার বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতিসহ ৩ জনকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে প্রভাবশালীরা। অধ্যক্ষকে সরিয়ে দেয়ার সময় কিছু শিক্ষার্থীর সমাবেশ ঘটাতে পারলেও এবার নিজেরাই দলবদ্ধ হয়ে সদস্যদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে।
এমন অভিযোগ করেছেন গভর্নিং বডির সদস্যরাই। তারা জানিয়েছেন, যে চক্রটি মাদ্রাসাকে ধ্বংস করতে চাইছে, পড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত করতে চাইছে তারাই তাদেরকে জিম্মি করে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নিয়েছে।
কমিটির সভাপতি ও ঐতিহ্যবাহী সৎপুর কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা শফিকুর রহমান বলেন, একটি পক্ষ নিজেদের পূর্বশত্রুতার প্রতিশোধ নিতে দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। তারা মাদ্রাসাকে ধ্বংস করতে চায়। অবশ্য অপরপক্ষ দাবি করেছে, মাদ্রাসায় শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান।
স্থানীয় একাধিক সূত্র ও কমিটির সদস্যরা জানান, বিশ্বনাথ বাজারের পার্শ্ববর্তি শরিষপুর গ্রামের একটি পক্ষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা সেই বিরোধের জের ধরে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে চড়াও হয়। গেলো ১ সেপ্টেম্বর শরিষপুর গ্রামের কিছু শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে মাদ্রাসায় এসে তারা অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক পদত্যাগের চাপ দেয়। অধ্যক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক নাজিম উদ্দিনকে দায়িত্ব দিয়ে একটি অব্যহতিপত্র দেন। এ ঘটনায় সন্তোষ্ট না হয়ে মাদ্রাসায় শরিষপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান, মো. শাহজাহান, আব্দুল খালিক গিয়ে তালা মারেন। তারা এসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে কেউ তালা খোলা ও অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনার সাহস দেখালে তাদের প্রকাশ্যে হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এলাকায় এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে তারা আবার তালা খুলে দেয়। এদিকে তাদের দাবিতে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ পদত্যাগ না করায় তাকে পদত্যাগে চাপ অব্যাহত রাখে গভর্নিং বডির উপর। বডির সদস্যরা অনৈতিক ও অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে কাউকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এতে তারা আরও ক্ষুদ্ধ হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা নাজিম উদ্দিনের আহবানে শিক্ষকদের বেতন ব্যাংক থেকে ছাড় করাতে গভর্নিং বডির সভাপতি মাওলানা শফিকুর রহমান, সদস্য ফয়জুল ইসলাম, মো. শামসুল ইসলাম মাদ্রাসায় গেলে শরিষপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান, মো. শাহজাহান, আব্দুল খালিকসহ বেশ কয়েকজন এসে তাদের অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ করে ফেলেন। এসময় তারা একটি রেজুলেশনে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেয়। যেখানে অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নাজিম উদ্দিনের নাম উলে¬খ ছিল। নাজিম উদ্দিনও সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তারা সেখানে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে শারীরিকভাবে নাজেহাল করা হয়। বাধ্য করা হয় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মো. শাহজাহান। বলেন, তারা কাউকে জোরে পদত্যাগ করাননি। তারা নিজেদের অসুবিধার অজুহাত দেখিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।
বডির সদস্য মো. ফয়জুল ইসলাম বলেন, যারা এটি করেছে তারা এলাকার চিহ্নিত দুর্বৃত্ত। তারা আমাদেরকে দিয়ে জোর করে স্বাক্ষর করিয়েছে। আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। থানায় অবিহিত করতে গেলে তারা আমাদের অভিযোগ নেয়নি। আমরা আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা সেচ্ছ্বায় পদত্যাগ করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছেই করবো। ইউএনকে পত্র দিয়ে করবো। একটি গ্রামের দুস্কৃতিকারীদের হাতে পদত্যাগপত্র দিয়ে আসবো কেনো?