নিজস্ব প্রতিবেদক
ভারতে দুর্গাপূজায় ইলিশ উৎসবের রেওয়াজ চালু ছিল বেশ কয়েক দশক ধরেই। এ উৎসবের প্রয়োজনীয় ইলিশের বড় চাহিদা মেটাত বাংলাদেশ। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে তাই পদ্মার ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকত পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। সম্প্রতি বাংলাদেশে সরকার পতনের পর এ ধারাবাহিকতায় পড়েছে ভাটা।
সম্প্রতি এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এদেশ থেকে আর কোনো ইলিশ যাবে না ভারতে। এ ছাড়া ইলিশ পাঠানোর আবদার করে বাংলাদেশকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেটিরও কোনো জবাব পায়নি কলকাতা। এমন বাস্তবতায় আসন্ন দুর্গাপূজায় বাংলাদেশের ইলিশ প্রাপ্তি নিয়ে হতাশ কলকাতার ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর পাল্টেছে ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তভিত্তিক আমদানি-রপ্তানির চিত্র। অথচ এর আগে, প্রতি বছর পূজার সময় ইলিশ আসত বাংলাদেশ থেকে। উপহার হিসেবেই বাংলাদেশ থেকে ইলিশ যেত ভারতে।
এদিকে ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পদ্মার ইলিশ এবার আদৌ আসবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। ফলে এবার ভারতীয়দের পাতে পদ্মার ইলিশ নেওয়ার সুযোগ নাও হতে পারে ভেবে হতাশ অনেকেই।
সরকারি নীতিনির্ধারকরা ভারতে ইলিশ পাঠানো নিয়ে কঠোর অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশের কিছু অসাধু ব্যক্তি ভারতে ইলিশ পাচারের চেষ্টা করছে। তবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কঠোর অবস্থানে এসব চোরাচালান ভেস্তে যাচ্ছে।
গেল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মারফত বিজিবির কুমিল্লা সেক্টরের ৬০ ব্যাটালিয়ান জানিয়েছে, অবৈধভাবে ভারতে পাচারের সময় কুমিল্লায় ৪৪০ কেজি ইলিশ জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এর আগেরদিন বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল এলাকার মনোরা নামক স্থান থেকে ইলিশগুলো জব্দ করা হয়।
এ ছাড়া সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত থেকেও ভারতে পাচারের সময় ২৭৫ কেজি ইলিশ মাছ আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোরে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ঘিলাতলী নামক সীমান্ত এলাকায় বিজিবি অভিযান চালিয়ে মাছগুলো জব্দ করে।
তেমনি আরও কিছু এলাকা থেকে ইলিশ পাচার চেষ্টার অভিযোগ আসছে। তবে বিজিবি বলছে, যে কোনো ধরনের চোরাচালান প্রতিহতে তারা সচেষ্ট রয়েছে।