
The Wall News.Com
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার দুদিন পর রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই মো. আকবর হোসেন ভুঁইয়ার জামিন স্থগিত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত আকবরের জামিন স্থগিত করেন।
এডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক হকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মঙ্গলবার এ আদেশ দেন আদালত।
এ ব্যাপারে বুধবার সকালে রায়হান আহমদের মা সালমা বেগমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে,গত ৪ আগস্ট হাইকোর্ট এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়ার জামিন মঞ্জুর করে। রোববার (১০ আগস্ট) ওই আদেশ সিলেট মহানগর জজ আদালতে পৌঁছালে তার আইনজীবী বন্ড দাখিল করেন এবং একই দিন সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
পরদিন ১১ আগস্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমে জামিন ও মুক্তির খবর প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এর প্রেক্ষিতে ব্যারিস্টার অনিক হক দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজে জামিন স্থগিত করান। তবে এরআগেই আকবর মুক্তি পেয়ে যান। মুক্তির পর আকবর দেশছেড়ে পালাতে পারেন বলে শঙ্কা রায়হানের মায়ের।
আকবরের জামিন স্থগিতের তথ্য জানিয়ে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজির আহমদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আকবরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার পাশাপাশি সীমান্ত ও বিমানবন্দরে রেড অ্যালার্ট জারির আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলে এলাহী অভি জানান, বিকেল ৫টার দিকে চেম্বার জজ আদালত অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক হকের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেন।
রায়হান হত্যামামলার বাদিপক্ষের আইনজীবি ব্যারিস্টার এম এ ফজল চৌধুরী জানান, তিনি এই জামিন স্থগিতের আদেশের কথা শুনেছেন। তবে এই বিষয়ে কোন নথি এখনো তার হাতে পৌঁছেনি বলে জানান তিনি।
০২০ সালের ১০ অক্টোবর গভীর রাতে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান উদ্দিনকে নির্যাতন করা হয়। পরদিন সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়েছিল।
এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে। তারা ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্যরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।