• ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২০শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

‘এভারেজ’ থাকতে চায় কেন বেশিরভাগ মানুষ ?

The Wall News.Com
প্রকাশিত আগস্ট ১৩, ২০২৫
‘এভারেজ’ থাকতে চায় কেন বেশিরভাগ মানুষ ?

The Wall News.Com


চারপাশে দেখলেই বোঝা যায়, বেশিরভাগ মানুষ গড়পড়তা লাইফেই আটকে থাকে। কেউ চায় চাকরিতে টিকে থাকতে, কেউ চায় মাস শেষে শুধু একটা বেতন আসুক। তবে যেটা সে দেখছে না—তার ভেতরে কতটুকু সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে।

অথচ ছোটবেলায় যখন প্রশ্ন করা হতো, ‘বড় হয়ে কী হতে চাও?’ তখন কেউ বলতো ডাক্তার, কেউ বলতো পাইলট, কেউ বা বিজ্ঞানী। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই স্বপ্নগুলো কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে।

এর পেছনে বড় কারণ হলো ‘কমফোর্ট জোন’। আরামই যেন হয়ে দাঁড়ায় আসল ফাঁদ। প্রতিদিন একই টাইপের কাজ, একই টাইপের কথা, একই টাইপের চিন্তা। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা নেই, নিজের জীবনকে একটু ঝাঁকি দেওয়ার ইচ্ছা নেই।
কারণ আমরা ভয় পাই—যদি না পারি! এই ভয়টা আমাদের আটকে রাখে। আমরা ভাবি, ‘উপরে গিয়ে কী করবো?’ এই একটা লাইনই কতজনের জীবন বরবাদ করে দিয়েছে। অথচ, সফলতা আসলে সাহসীদের জন্য—যারা ভয় পায়, তবুও করে।

ধরুন, রিমন নামে একটা ছেলের কথা। ক্লাসে মাঝারি মানের ফলাফল করে, কোনো বিষয়েই খুব বেশি আগ্রহ নেই। সে দেখে, ক্লাসের কেউ ফ্রিল্যান্সিং শেখে, কেউ স্টার্টআপে কাজ করছে, কেউ আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের কনটেন্ট বানানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু রিমন ভাবে, ‘আমি পারবো না’। অথচ রিমনেরও একটা স্বপ্ন ছিল—একটা ট্রাভেল ভ্লগ চালাবে। কিন্তু কেউ তাকে বলে দেয়নি, ভ্লগ শুরু করতে সাংবাদিক বা লেখক হতে হয় না। শুরু করতে হয়, শুধু শুরু।

আরেকটা ব্যাপার হলো—লক্ষ্য নেই বলেই মানুষ আটকে থাকে। অনেকেই জানেই না, সে কী চায়। চারপাশে যা দেখে, তাই ধরে নেয়—এই বুঝি জীবন। ‘চাকরি পেলেই হলো’, ‘বিয়েটা হয়ে যাক, তারপর দেখবো’—এসব কথার আড়ালে আসলে একরকম হেরে যাওয়াই লুকিয়ে থাকে। অথচ কেউ যদি খুব স্পষ্ট করে জানে, সে কী চায়, কেন চায়, তাহলে তাকে ঠেকানো মুশকিল।

তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার, সফলতা লম্বা একটা প্রক্রিয়া। এটা কোনো জাদুমন্ত্র না। শুরুতে কিছুই কাজ করবে না। কেউ প্রশংসা করবে না, হয়তো উল্টো হাসবে। কিন্তু যেদিন নিজের প্রতি বিশ্বাস ধরে রাখতে পারবে, সেদিনই শুরু হবে বদলে যাওয়ার যাত্রা। এই যাত্রা শুরু করার সাহসটাই বেশিরভাগ মানুষের নেই। তাই তারা থেমে যায়, গড়পড়তা হয়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত, নিজের জীবন যদি সিনেমার মতো ভাবেন, তাহলে নিজেকেই হতে হবে সেই সিনেমার নায়ক। বোঝার চেষ্টা করুন, কেউ এসে আপনাকে বদলে দেবে না। সময় চলে যাবে, কিন্তু আপনি যদি নিজের জীবনে একটু সাহস দেখান, একটু চেষ্টা করেন, একটু বাড়তি সময় দেন শেখার জন্য—তাহলে আপনিই হয়ে উঠতে পারেন সেই ব্যতিক্রম, যাকে সবাই একদিন দেখে অবাক হয়ে বলবে, ‘এই ছেলেটা বা মেয়েটা কীভাবে এতদূর এলো?’

সবাই পারে না। কিন্তু যারা পারে, তারা আলাদা কিছু করে বলেই পারে। প্রশ্ন হলো—আপনি কোন দলে থাকবেন?