ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি’র আয়োজনে র্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী মাঠে র্যালিপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে সম্মূখ সমরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। তিনি ১৯৭৫ সালে দেশ ও জাতীর প্রয়োজনে আবারো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। জুলাই ও আগস্ট গণ বিপ্লবে আগামী দিনের রাষ্ট্র নায়ক তারেক রহমান নেতৃত্ব না দিলে হয়ত আমরা এই স্বাধীনতা পেতাম না। তাই বাংলাদেশ, শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান একই সূত্রে গাঁথা। আমরা কারো করদরাজ্য পরিণত হওয়ার জন্য স্বাধীনতা লাভ করিনি। অরক্ষিত স্বাধীনতা পরাধীনতার সমান।
তিনি আরও বলেন, তারা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। তাই এদেশে ফ্যাসিবাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। তারা এখন বিএনপির সাথে একাত্ম হয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে চায়। এটি সম্ভব নয়। কারন আওয়ামী লীগের সাথে গণতন্ত্র মানায় না। তারা অতিতেও বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলো। তারা সব সময় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছিল। যারা গণহত্যার সাথে জড়িত ছিলো, তারা পালিয়ে গেলেও তাদেরকে দেশে এনে গণহত্যার বিচার করা হবে। যতদিন পর্যন্ত দেশে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী যৌথ পরিচালনায় শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুুল হক চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, এডভোকেট হাদীয় চৌধুরী মুন্নি, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও ড্যাব সিলেট জেলার সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম, সিলেট জেলা বারের পিপি এডভোকেট আশিক উদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মূখে যখন পড়েছিল তখন দেশের সংগ্রামী শিপাহী-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল। এবারও দেশের মানুষ শহীদ জিয়ার উত্তরাধিকারী দেশনায়ক তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আাছে। দেশের সাধারণ মানুষ তারেক রহমানের হাতেই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে চায়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দেশের প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করেছিলেন, ঠিক দেশের ক্লান্তিকালে আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান নেতৃত্বে দিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনের রাষ্ট্র গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের জন্য অমৃত্যু কাজ করে গিয়েছিলেন, সেই ধারাবাহিকতায় সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিনযাবত দেশের মানুষের প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে আর তার নেতৃত্¦ে আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক জননেতা তারের রহমান দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
সভাপতির বক্তব্য সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আগামী নির্বাচনে অংশ নিয়ে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করার প্রত্যয় নেয়াই হোক আমাদের এবারের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অঙ্গীকার।
সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। র্যালীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে, বিপ্লব ও সংহতি দিবসের র্যালীতে যোগদান করতে দুপুর থেকে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রেজিস্ট্রারী মাঠে জড়ো হতে থাকেন।