ওয়াল নিউজ ডেস্ক
মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আসনের সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে।
বুধবার সুনামগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তাহিরপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের গিয়াস উদ্দীনের ছেলে মোহাম্মদ আলী।
মামলায় আসামিরা হলেন টানা তিন মেয়াদে থাকা সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান, সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপক আলী আহমদ খান, উপজেলার চারাগাঁওয়ের সাইফুল ইসলাম, ব্রাহ্মণগাঁওয়ের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ব্রাহ্মণগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু সাঈদসহ ১৩ জন।
আদালতে তার দেওয়া মামলার এজাহারে অবৈধভাবে ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুস নিয়ে কোনো নীতিমালার তোয়াক্কা না করে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় একাধিক পদে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ তুলে ধরেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ২০২০ সালে তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মীসহ একাধিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা ও চাকরিবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি দুদকে অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের মদদে বিপুল অংকের টাকা ঘুস লেনদেনের মাধ্যমে অযোগ্য, অদক্ষ লোকজনকে চাকরির জন্য মনোনীত করেন।বিগত সময়ে আয়নাঘর, গুম, খুন, অপহরণ, ঢালাওভাবে নাশকতার মামলাসহ জুলুমতন্ত্র কায়েম থাকায় আদালতে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
বাদী অবৈধ নিয়োগের তদন্ত, দুর্নীতি প্রমাণিত হলে ওই সময়ে সব নিয়োগ বাতিল এবং দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে যোগদান করেন মো. মিজানুর রহমান। এরপর থেকে উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসাসহ উপজেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পদাধিকার বলে নিয়োগ কমিটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার সুযোগ নিয়ে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করেন।
তার বিরুদ্ধে মামলা ও নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মিজানুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি তো শুধু ওই সব নিয়োগ কমিটির সদস্য ছিলাম। প্রতিষ্ঠানের প্রধান, প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতিদের এসবের দায় নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন সময় খারাপ, আমি বদলি হয়ে তাহিরপুর থেকে চলে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। এই উপজেলায় আর থাকব না। তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান বলেন, মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বৃহস্পতিবার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল বাশার জানান, মামলাটি আদালতের বিচারক আমলে নিয়েছেন। আদালত পরে ওই মামলার আদেশ প্রদান করবেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমি আশাবাদী।
প্রধান সম্পাদক: জাকেরিন চৌধুরী জয়
অফিস: ১০৪/১১ নূরানী বনকলাপাড়া,
সুবিদ বাজার সিলেট।
মোবাইল : ০১৬০১০৩৮৪৮১, Email: thewallnews181@gmail.com