• ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন

The Wall News.Com
প্রকাশিত অক্টোবর ২১, ২০২৪
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন

সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৫৯৮ জন


ওয়াল নিউজ ডেস্ক


চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজার ৪৮৫টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানির শিকার হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৯৮ জন, আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৬০১ জন। সে হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬০৯টির বেশি। আর প্রতি মাসে গড়ে সড়কে নিহত হয়েছেন ৬২২ জন, আহত হয়েছেন এক হাজার ৬৬ জন।
এ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়কে প্রতিদিনই গড়ে ২০টির বেশি দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হচ্ছেন, আহত হচ্ছেন ৩৫ জনের বেশি।
সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষক সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সড়কে নিহতের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন, শিশু ৭২৯টি।
এদিকে দুই হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ৯২৪ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ, নিহতের সংখ্যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় এক হাজার ১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, একই সময়ে ৮৩টি নৌ দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত ও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত ও ২২৩ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী এক হাজার ৯২৪ জন (৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ), বাস যাত্রী ২৯৩ জন (৫ দশমিক ২৩ শতাংশ), পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী ৪২০ জন (৭ দশমিক ৫০ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স ও জিপের আরোহী ২৯৫ জন (৫ দশমিক ২৬ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী এক হাজার ৯৭ জন (১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি নসিমন-করিমন-ভটভটির মতো যানবাহনের যাত্রী ২৭৮ জন (৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৭০ জন (৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী যানবাহনের পরিমাণ ২৩ দশমিক ১৪ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স ও জিপ ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, মোটরবাইক ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, তিন চাকার যানবাহন ১৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা ২ দশমিক ২০ শতাংশ ও অজ্ঞাত যানবাহন ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৩১০টি (৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ), সকালে এক হাজার ৪৬৫টি (২৬ দশমিক ৭০ শতাংশ), দুপুরে এক হাজার ১০২টি (২০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ), বিকেলে ৮৬৫টি (১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ), সন্ধ্যায় ৫২৪টি (৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ) এবং রাতে এক হাজার ২১৯টি (২২ দশমিক ২২ শতাংশ)।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে মোট দুর্ঘটনার ২১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ১২ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
এ ছাড়া বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ১০ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। আর ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানির পরিমাণ ৭ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এক হাজার ১৭২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ৩৬৪ জন। আর সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৯৯ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ৯টি জাতীয় দৈনিক ও সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ছাড়াও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে।