• ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

অপরূপ লাবণ্যে ভরপুর প্রকৃতিকন্যা জাফলং

The Wall News.Com
প্রকাশিত অক্টোবর ১৭, ২০২৪
অপরূপ লাবণ্যে ভরপুর প্রকৃতিকন্যা জাফলং

তাওহীদূর রহমান শাহ্‌


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তঘেঁষা পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। সুউচ্চ সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে সুন্দরতম পিয়াইন নদ, মেঘালয় পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বয়ে আসা স্বচ্ছ জলের ধারা দেখা মেলে প্রকৃতিকন্যা নামে খ্যাত জাফলংয়ে। আর তাইতো এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে সারা দেশ থেকে জাফলংয়ে বেড়াতে আসেন পর্যটকেরা।

যেকোনো উৎসব বিশেষ করে ঈদ ও পূজার ছুটিতে একটানা পর্যটকদের ঢল থাকে জাফলংয়ে। বলা বাহুল্য নয় যে, শুধুমাত্র এক জাফলং ভ্রমণ যেকোনো পরিব্রাজকের মনে এক টুকরো বাংলাদেশকে গেঁথে দিতে যথেষ্ট। মেঘালয়ের উঁচু নিচু পাহাড় আর পিয়াইন নদের স্বচ্ছ জলে ডুবন্ত পাথরের অনিন্দ্য সমারোহকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ ঘটে পর্যটকদের।

এটি এমন এক জায়গা যা প্রতি ঋতুতেই নতুন রূপে সেজে ওঠে। তবে বৃষ্টির মৌসুমে প্রকৃতি কন্যা নিজের সকল সৌন্দর্য যেন উজাড় করে দেয়। স্বচ্ছ স্রোতস্বিনীর নিচে পাথরের ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা, আর সংগ্রামপুঞ্জীর মায়াবী সৌন্দর্য অবলোকন করতে চাইলে বেড়াতে আসতে হবে বর্ষাকালে। তাছাড়া জুন থেকে অক্টোবরের সময়টাতে; এমনকি নভেম্বরেও পাহাড়ের সবুজটা যেন আরও বেশি করে ফুটে ওঠে।

পিয়াইন নদীর হাঁটু সমান পানিতে দাঁড়িয়ে মেঘে ঢাকা সবুজ পাহাড়ের চূড়া খোঁজার অনুভূতির সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা চলে না। পিয়াইনের জলধারা ঝুলন্ত সেতুর নিচ দিয়ে এসে দু’পা স্পর্শ করতেই সারা শরীরে বয়ে যাবে হিম-শীতল শিহরণ। কেননা ব্রিটিশ শাসনামলে গড়া এই সেতু সাক্ষী হয়ে আছে ১৮৯৭-এর ভূমিকম্পে সৃষ্টি হওয়ার ডাউকি ফল্টের।

এছাড়া পিয়াইনের শাখা ডাউকি নদীর সর্পিলাকার প্রবাহটাও অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণে কাছে টানে পর্যটকদের। নৌকা করে ডাউকি নদীপথে কিছুক্ষণ ভেসে গেলেই দূরে হাতছানি দিয়ে ডাকবে সংগ্রামপুঞ্জি বা মায়াবী ঝর্ণা।

ভারত-বাংলাদেশ দু-দেশের মানচিত্রে ভিন্নতার কারণে কেবল এপারের পর্যটকদের ওপারে যাওয়া কিংবা ওপারের পর্যটকদের এপারে অবাধে আসা-যাওয়া সম্ভব নয়৷ তবে নিজস্ব গণ্ডিতেই দু’দেশের পর্যটকরা উপভোগ করেন জাফলং এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য রূপ।

স্বচ্ছ পানির প্রবাহমান নদী, চিত্তাকর্ষক ঝুলন্ত ব্রিজ এবং পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসতি; এর সবই মিলবে সিলেটের জাফলং ভ্রমণে। এক নিমিষে এত কিছুর সাক্ষাত দেশের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। সেদিক থেকে নিঃসন্দেহে প্রকৃতি কন্যার আতিথেয়তার কোনো তুলনা হয় না। তাইতো এই অপরূপ লাবণ্যের জন্যই বার-বার ফিরে যেতে মন চাইবে পিয়াইন নদীর অববাহিকায়, সিলেটের অন্যতম সেরা পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে।

 

ভিডিও লিংক- https://fb.watch/viitEpNyde/