ওয়াল নিউজ ডেস্ক
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচেও নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ হেরেছে ১৩৩ রানের বড় ব্যবধানে। এটি ছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেরে শেষ টি২০।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। মাত্র ৪ রানে বিদা্য় নেন অভিষেক শর্মা। কিন্তু ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান ওপেনার সঞ্জু স্যামসন। মাত্র ৪০ বলেই সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক টি২০-তে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। রোহিত শর্মা ২০১৭ সালে ইন্দোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪০ বলে সেঞ্চুরি করেন।
পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারেই ৮২ রান তোলে ভারত। ৭.১ ওভারে দলীয় শতক পেরিয়ে যায়। এটি ভারতের দ্রুততম দলীয় একশ। এর আগে ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭.৬ ওভারে দলীয় শতরান করে ভারত।
স্যামসন আর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব দ্বিতীয় উইকেটে ১৭৩ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন। ভারতের পক্ষে এটি দ্বিতীয় উইকেটে সর্বাধিক রানের রেকর্ড। ৪৭ বলে ১১ চার, ৮ ছক্কায় ১১১ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে বিদায় নেন সঞ্জু।
এরপর সূর্যকুমার যাদব ৩৫ বলে ৮ চার, ৫ ছক্কায় ৭৫ রান করে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের শিকার হন। তবে রানের গতি থামেনি। রিয়ান পরাগ ১৩ বলে ১ চার, ৪ ছক্কায় ৩৪ ও হার্দিক পান্ডিয়া ১৮ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৭ রান করেন।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান তোলে ভারত। তানজিম হাসান সাকিব ৬৬ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। এটি আন্তর্জাতিক টি২০-তে দ্বিতীয় সর্বোাচ্বচ দলীয় সংগ্রহ। নেপাল গত বছর এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৩১৪ রান করে।
অবশ্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের এটাই সর্বোচ্চ দলীয় রান। আফগানিস্তান ২০১৯ সালে দেরাদুনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৭৮ রান করে। ভারতের অবশ্য এটাই আন্তর্জাতিক টি২০-তে সর্বোচ্চ রান। ২০১৭ সালে ইন্দোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারত তাদের পূর্বের সর্বোচ্চ দলীয় রান করে ৫ উইকেটে ২৬০।
জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৪ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম বলেই পারভেজ হোসেন ইমন সাজঘরে ফেরেন শুন্য হাতে। কিন্তু এরপর তানজিদ হাসান তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত দ্রুতবেগে ব্যাট চালিয়েছেন।
কিন্তু তানজিদ ১২ বলে ৩ চারে ১৫ ও শান্ত ১১ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ১৪ রানে বিদায় নিলে কিছুটা বিপদেই পড়ে বাংলাদেশ। যদিও পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৫৯ রান তুলে ফেলে।
এরপর চতুর্থ উইকেটে এদিন চারে নামা লিটন কুমার দাস ও তাওহিদ হৃদয় ৫৩ রানের জুটি গড়েন। এই সময়ে প্রথম ১০ ওভারে ৯৪ রান তুলে বেশ ভালোভাবেই এগিয়েছে বাংলাদেশ। নীতিশ কুমারের এক ওভারে ৫ বাউন্ডারিতে লিটন ২০ রান তুলে নেন।
কিন্তু ২৫ বলে ৮ চারে ৪২ রান করা লিটন বিদায় নেওয়ার পর আর কেউ সুবিধা করতে পারেননি। একাই লড়েছেন তাওহিদ হৃদয়। তিনি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। ৪২ বলে ৫ চার, ৩ ছয়ে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন তাওহিদ।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৪ রানে থামে বাংলাদেশ। রবি বিষ্ণুই ৩টি ও মায়াঙ্ক যাদব ২টি উইকেট নেন। বাংলাদেশ হেরে যায় ১৩৩ রানে। এটি ভারতের টি২০-তে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার টি২০-তে।
২০২২ সালের বিশ্বকাপে সিডনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৪ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এতোদিন সেটাই ছিল টি২০-তে সবচেয়ে বড় পরাজয়। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারত সেই রেকর্ড দখলে নিল।