ওয়াল নিউজ ডেস্ক
একপাশে ধূপকাঠি, অন্যপাশে আতরের সুঘ্রাণ। একপাশে উলুধ্বনি, অন্যপাশ থেকে ভেসে আসছে আজান। এভাবেই ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রায় শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দির।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাড়কের কামাইছড়া বাজার এলাকায় এভাবেই ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুটি পৃথক ধর্মীয় উপাসনালয়। স্থানীয়রা জানান, একই আঙিনায় প্রায় ৫০ বছর ধরে কোনো প্রকার সাম্প্রতিক কলহ, দাঙ্গা ছাড়াই দুটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম পালন করে আসছেন নির্দ্বিধায়।
১৯৫৯ সালে প্রথমে এখানে দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে বাজার এলাকার মুসল্লিরা তাদের নামাজ আদায়ের করার জন্য ছোট মসজিদ ঘর নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ওই মসজিদের নামকরণ করা হয় কামাইছড়া বাজার জামে মসজিদ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের যখন পূজা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান আসে, তখন দুই কমিটি একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নেয়। নামাজ বা আজানের সময়সূচি অনুযায়ী হিন্দুদের ধর্মীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকে। আবার যখন নামাজ শেষ হয়, তখন পূজার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুর রহিম জানান, কামাইছড়া বাজার মসজিদের পাশেই রয়েছে মন্দির। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ যার যার ধর্ম পালন করেন। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয় না।
কামাইছড়া দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নির্মল তাঁতি জানান, ১৯৫৯ সালে মন্দির প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণ করা হয় কামাইছড়া বাজার। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও চা-বাগানের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের দেওয়াল ঘেঁষে প্রতিষ্ঠা করেন কামাইছড়া বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে একই আঙিনায় চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম। সামান্য বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুর আহসান বলেন, কামাইছড়ায় একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দির একটি বিরল দৃষ্টান্ত। এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন। যার প্রমাণ একপাশে দুর্গা মন্দির ও অন্যপাশে কামাইছড়া বাজার জামে মসজিদ।
প্রধান সম্পাদক: জাকেরিন চৌধুরী জয়
অফিস: ১০৪/১১ নূরানী বনকলাপাড়া,
সুবিদ বাজার সিলেট।
মোবাইল : ০১৬০১০৩৮৪৮১, Email: thewallnews181@gmail.com