ওয়াল নিউজ ডেস্ক
টানা দুই হারে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। চাওয়া ছিল ব্যাটিংয়ে উন্নতি। কিন্তু আরও একবার দেখা গেল পুরোনো চিত্রই। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় হলো না পুঁজি। এবার বোলাররাও পারলেন না লড়াই করতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হেরেছে ৮ উইকেটে।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০ ওভার খেলে বাংলাদেশ করতে পারে ৮ উইকেটে ১০৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজ লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১২.৫ ওভারেই। জয়ে আসর শুরুর পর টানা দুই হারে সেমি-ফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ উইকেটে হারের পর টানা দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে ভালোভাবেই থাকল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের ইনিংসে বিশ ছাড়াতে পারেন কেবল একজন। অধিনায়ক নিগার সুলতানা ৩৯ রান করেন ৪৪ বলে ৬টি চারের সাহায্যে। ইনিংসটির পথে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে এই সংস্করণে ২ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ১০২ ম্যাচের ৯৬ ইনিংসে ব্যাট করে তার রান এখন ২ হাজার ১৬। ১৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের ভিত গড়ে দেন অফ স্পিনার কারিশমা রামহারেক। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই।
তিন ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং হলো খুব বিবর্ণ। প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে ১১৯ রান করলেও, বোলারদের নৈপুণ্যে বিশ্বকাপে ১০ বছর পর জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে বোলাররা ইংল্যান্ডকে ১১৮ রানে বেঁধে রাখতে পারলেও, রান তাড়ায় ২০ ওভার খেলে বাংলাদেশ করতে পারে ৭ উইকেটে ৯৭।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে অধিনায়ক নিগার বলেছিলেন, ব্যাটিংয়ে উন্নতি করে এই ম্যাচ জিততে চান তারা। পূরণ হলো না কোনো চাওয়াই। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে একটি চার মারেন দিলারা আক্তার। পরের ওভারে বাউন্ডারি আসে সাথি রানির ব্যাট থেকে। তবে টিকতে পারেননি তিনি, কারিশমাকে সুইপ করার চেষ্টায় বলের লাইন মিস করে স্টাম্পড হয়ে ফেরেন ১২ বলে ৯ রানে করে।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে কারিশমার বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন দিলারা (১৮ বলে ১৯)। এরপর বলতে গেলে দলকে একাই টানেন নিগার। নবম ওভারে লেগ স্পিনার ফ্লেচারকে তিনটি চারে ১৪ রান নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তিনে নেমে সোবহানা মোস্তারি ১৬ রান করেন ২২ বল খেলে। ফ্লেচারের পরপর দুই বলে ফেরেন তাজ নেহার ও স্বর্ণা আক্তার। রিতু মনি করেন ১৩ বলে ১০। এক প্রান্ত আগলে রাখা নিগার ক্যাচ দিয়ে আউট হন শেষ ওভারে।
রান তাড়ায় হেইলি ম্যাথিউস ও স্টেফানি টেইলরের উদ্বোধনী জুটিই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের পথে এগিয়ে নেয় অর্ধেকটা। পাওয়ার প্লেতে দুজন তোলেন ৪৮ রান। এই সময়ে ৬টি বাউন্ডারি আসে ম্যাথিউসের ব্যাট থেকে।
অষ্টম ওভারে ম্যাথিউসকে বোল্ড করে ৫২ রানের শুরুর জুটি ভাঙেন পেসার মারুফা আক্তার। ২২ বলে ৬ চারে ৩৪ রান করেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।
পরের ওভারে টেইলরকেও ২৩ রানে ফেরানোর সুযোগ এসেছিল, কিন্তু রাবেয়া খানের বলে মিড অফ থেকে খানিকটা এগিয়ে এসে সহজ ক্যাচ ফেলেন সোবহানা। একটু পর ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে ফেরেন টেইলর (২৯ বলে ২৭)। তিনে নেমে ১৬ বলে ২১ রান করে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান শিমেইন ক্যাম্পবেল। তাকে ফেরান নাহিদা আক্তার। রাবেয়ার তিন বলের মধ্যে দুই ছক্কায় ম্যাচের ইতি টেনে দেওয়া ডিয়েন্ড্রা ডটিন অপরাজিত থাকেন ৭ বলে ১৯ রানে। আগামী শনিবার গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১০৩/৮ (দিলারা ১৯, সাথি ৯, সোবহানা ১৬, নিগার ৩৯, তাজ ১, স্বর্ণা ০, রিতু ১০, ফাহিমা ২, রাবেয়া ১*, নাহিদা ২*; হেনরি ২-০-১১-০, ম্যাথিউস ৪-০-১৯-১, কারিশমা ৪-০-১৭-৪, জোসেফ ১-০-৫-০, মুনিসার ৪-০-২০-০, অ্যালাইন ১-০-৫-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১২.৫ ওভারে ১০৪/২ (ম্যাথিউস ৩৪, টেইলর ২৭ রিটায়ার্ড হার্ট, ক্যাম্পবেল ২১, ডটিন ১৯*, হেনরি ২*; নাহিদা ৩-০-২২-১, মারুফা ৩-০-২০-১, ফাহিমা ২-০-১৮-০, রাবেয়া ২.৫-০-২৫-০, রিতু ১-০-৯-০, স্বর্ণা ১-০-৯-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: কারিশমা রামহারেক