ওয়াল নিউজ ডেস্ক
কানপুরে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্টে ৭ সেশনের বেশি খেলা হয়নি। বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়েছে আড়াই দিন। কিন্তু এর মধ্যেই পরাজয়ের শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন শেষে গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২ উইকেটে করেছে ২৬ রান। এখনো ২৬ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারীরা। আজ শেষদিনে বাংলাদেশ হার এড়াতে পারে শুধু ব্যাটাররাই ভালো করলে।
গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছে পরাজয়। আড়াই দিন পর সোমবার বল মাঠে গড়ানোর পর সবমিলিয়ে ১৮ উইকেটের পতন ঘটেছে, ৪৩৭ রান হয়েছে। মাত্র ৮৫ ওভার খেলা হতেই এতো ঘটনা দেখেছে কানপুর টেস্ট। উভয় দলেরই ৯টি করে উইকেট পড়লেও বাংলাদেশ এদিন করেছে ১৫২ আর ভারত করেছে ২৮৫! এতেই পার্থক্যটা স্পষ্ট।
আজ শেষদিন কঠিন পরীক্ষায় সফরকারীরা। এর আগে মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির পরও ২৩৩ রানে প্রথম ইনিংস থামে বাংলাদেশ দলের। প্রথম দিন ৩৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৭ রান করে বাংলাদেশ। মুমিনুল হক সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন। তিনি ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি করলেও বাকিরা জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজের পেস ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিনে নাজেহাল হয়েছেন। শুধু ৫৪ রানের একটি জুটি হয়েছে সপ্তম উইকেটে মুমিনুল ও মেহেদি হাসান মিরাজের মধ্যে। ফলে বাকি ৭ উইকেট আর ১২৬ রান যোগ করতেই হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এরপর টি২০ মেজাজে ব্যাট চালিয়ে ৯ উইকেটে ২৮৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণি কার্যকর হলেও ভারত ওভারপ্রতি ৮.২২ রেটে রান তুলেছে। হয়েছে অনেক রেকর্ড! টি২০ মেজাজে ব্যাট চালিয়ে ৩ ওভারেই ৫১ রান তুলে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ভারত। ইংল্যান্ড ৪.২ ওভারে চলতি বছরই নটিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের রেকর্ড করে দলীয় অর্ধশতকের।
যশস্বী জয়সওয়াল আর শুভমান গিল দ্রুতগতিতে ব্যাট চালিয়ে ১০.১ ওভারেই দলের রান শতক পার করে আরেকটি দ্রুততম দলীয় ১০০ রান তোলার বিশ্বরেকর্ড গড়েন। ১২.২ ওভারে গত বছর ভারতই দ্রুততম দলীয় শতকের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। জয়সওয়াল দুর্বার ছিলেন। বাংলাদেশের পেসাররাও ঠিক লাইন-লেংন্থে বল করতে পারেনি।
ভারতের পক্ষে টেস্টে চতুর্থ দ্রুততম অর্ধশতক পেয়েছেন জয়সওয়াল মাত্র ৩১ বলে। তিনি থামেননি। তার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়েন শুভমান গিল। জয়সওয়াল ৫১ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় ৭২ রান করে হাসানের ফিরতি স্পেলে বোল্ড হয়েছেন।
এরপর সাকিব আল হাসান তার বাঁহাতি স্পিনের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন। ৩৬ বলে ৪ চার, ১ ছক্কায় ৩৯ রান করে তার প্রথম শিকার হন। ঋষভ পান্তকেও (১১ বলে ৯) বেশিদূর যেতে দেননি সাকিব। তবে পঞ্চম উইকেটে বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল ঝড় তুলে ৮৭ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৫৯ বল থেকে। এতেই লিড পেয়ে যায় ভারত।
কোহলি ৩৫ বলে ৪ চার, ১ ছক্কায় ৪৭ রান করে সাকিবের স্পিনে বোল্ড হয়ে যান। মেহেদি হাসান মিরাজও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। তবে রাহুল একাই এরপর তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ৪৩ বলে ৭ চার, ২ ছক্কায় ৬৮ রান করেন। তিনিও মিরাজের অফস্পিনে স্টাম্পিং হন। একই ওভারে আকাশ দীপকেও (৫ বলে ১২) সাজঘরে ফেরান মিরাজ। তাই ৫২ রানের লিড নিয়ে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ভারত।
৪টি করে উইকেট নিলেও ওভারপ্রতি ৬+ হারে রান তুলেছে ভারত। সাকিব আল হাসান ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে ৭১২ উইকেট নিয়ে এখন ছাড়িয়ে গেছেন ভারতের সাবেক অফস্পিনার হরভজন সিংকে (৭১১)।