ওয়াল নিউজ ডেস্ক
ক্রিকেট ম্যাচের টিকেট পেতে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুসারীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান অবশেষে হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও বিপিএলের বেশির ভাগ টিকেট অনলাইনে বিক্রি করার উদ্যোগ দিচ্ছে বিসিবি। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসের দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই এটা চালু হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি প্রধান ফারুক আহমেদ।
বাংলাদেশে টিকেট সংগ্রহ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ করতে ক্রিকেটামোদীদের দাবি ছিল অনেক দিনের। গত বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থেকে অনলাইনে কিছু টিকেট বিক্রির উদ্যোগ নেয় বিসিবি। তবে সেই সংখ্যা ছিল অতি সামান্য। বিসিবির ওয়েবসাইট থেকে টিকেট বিক্রি করা হয়েছে। তবে ব্যাপক হারে তা চালু হয়নি। বিসিবিরও সেদিকে নজর খুব একটা ছিল না।
এবার সেখানেই জোর দিচ্ছেন ফারুক আহমেদ। বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষ বৃহস্পতিবার রাতে বিসিবি সভাপতি জানান, বড় অংশের টিকেটই অনলাইনে ছাড়ার ব্যবস্থা রাখছেন তারা।
“আমাদের যে খেলাগুলি হয়, কাগজের টিকেটে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আমরা টিকেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করতে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক ম্যাচ, বিপিএল সবকিছুতে এটা বোর্ডের রাজস্ব আয়ের ভালো উৎস হতে পারে বলে মনে করছেন পরিচালকরা।
“আগে খুব কম পরিমাণে, ছোট্ট অংশ ছিল অনলাইনে টিকেট পাওয়া যেত। এটাকে আমরা ৭০-৮০ শতাংশই ডিজিটালাইজড করব, যতটা আমাদের জন্য উপযুক্ত হয়। প্রত্যেকটা টিকেটের হিসাব তাতে থাকবে আমাদের কাছে।”
মূলত টিকেট ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার জন্যই অনলাইনে টিকেট বেশি রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানালেন বিসিবি সভাপতি।
“আমাদের কিছু টিকেট সৌজন্যমূলক দিতে হয়, কিছু এজেন্সি আছে, যারা কাজ করে। তাদের কিছু দাবি থাকে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, র্যাব, পুলিশ, যারা যারা থাকেন, তাদের কথা বিবেচনায় রেখেছি। সৌজন্যমূলক সেই টিকেটগুলো যেন আমরা সনাক্ত করতে পারি। টিকেটে কিউআর কোড থাকবে। কোনটা সৌজন্যমূলক, কোনটা রাজস্ব টিকেট, সেটা যেন বুঝতে পারি, সেই ব্যবস্থা আমরা করতে যাচ্ছি।”
সেই পথে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামী মাসের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজকে পরীক্ষামূলক হিসেবে দেখছে বিসিবি।
“সামনে দুটি টেস্ট ম্যাচ আছে। পাইলট প্রজেক্ট হবে এই সিরিজ। বেশি টিকিট করতে হবে না, টেস্ট ম্যাচে দর্শক বেশি হয় না। ব্যবস্থাপনা কেমন হতে পারে, এসব নিয়ে আলোচনা হবে। সিরিজ যেহেতু খুব কাছে, আমরা দেখব। সিস্টেমটা যারা তৈরি করছে, তারা যদি দিতে পারে, তাহলে চেষ্টা করব আমরা।”
“আমাদের একটা সিস্টেম আছে। তবে সেটা পুরোপুরি নয়, আমরা যেভাবে চাচ্ছি, তেমন নেই। নতুন করে আমর কাজটা যাদেরকে করতে বলেছি, তারা যদি এই সিস্টেমের সঙ্গে মেলাতে পারে, তাহলে হলোই। না হলে পুরোপুরি নতুন সিস্টেমে আমরা যাব।”
টিকেট ব্যবস্থাপনা আধুনিক করার পাশাপাশি আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই সভায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাঠকর্মীদের স্থায়ীকরণের উদ্যোগ। মাঠকর্মীদের অনেকেই প্রচণ্ড অবহেলিত ও বঞ্চিত বলে অভিযোগ ছিল অনেক দিনের। তাদের একটি বড় অংশকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানালেন বোর্ড প্রধান।
“মাঠকর্মীদের মধ্যে মাস্টার রোলে কাজ করছিলেন যারা, তাদের মধ্যে যাদের কাজের বয়ম ৬ বছর হয়েছে, তাদেরকে স্থায়ী করার পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। সাত থেকে ১০ বছর বয়স হয়েছে যাদের তাদের নিয়ে গড়া হয়েছে আরেকটি ক্যাটাগরি। ১০ থেকে ১৪ বছর কাজের বয়স যাদের, তাদেরকে স্থায়ী করা হচ্ছে পারিশ্রমিক ১০ শতাংশ বাড়িয়ে। সঙ্গে ইন্সুরেন্স, প্রভিডেন্ট ফান্ড, এসব যোগ হচ্ছে।”
“সব মিলিয়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। বোর্ডের ব্যয় তাতে বাড়বে। তবে সমস্যা নেই, তারা খেলাটির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।”