• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ৬

The Wall News.Com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ৬

ওয়াল নিউজ ডেস্ক

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সিলেট জেলার কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ জেলার বিশ^ম্ভরপুরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে নিহতরা হলেন- কানাইঘাট পৌরসভার উত্তর দলইমাটি (খেলুরন্দ) গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে নুর উদ্দিন (৬০) ও উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কেউটিহাওর গ্রামের জমশেদ আলীর ছেলে কালা মিয়া (৩০),
জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তাপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নয়াগ্রাম আগফৌদ এলাকার নূরুল হকের ছেলে নাহিদ আহমদ (১৩) ও ভিত্রিখেল ববরবন্দ গ্রামের ইজিবাইক চালক আবদুল মান্নান মনাই (৪৫), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা গ্রামের নেজামুল হক (২১) এবং সুনামগঞ্জ জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নের সিরাজপুর চরপারা গ্রামে দ্বীন ইসলাম (৬০)।
আমাদের কানাইঘাট প্রতিনিধি জানান, কানাইঘাটে শনিবার দুপুর থেকে থেমে বৃষ্টি ও হালকা বাতাসের সাথে প্রচন্ড বজ্রপাত হয়। বিকেল ৪টার দিকে বজ্রবৃষ্টির সময় কানাইঘাট পৌরসভার উত্তর দলইমাটি (খেলুরন্দ) গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে নুর উদ্দিন (৬০)সহ আর কয়েকজন গ্রামের পাশে মাছ ধরতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েন নুর উদ্দিন। তার সাথে থাকা আরো ৪ জন বজ্রপাতে আহত হলে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
অপরদিকে, উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কেউটিহাওর গ্রামের জমশেদ আলীর ছেলে কালা মিয়া (৩০) বজ্রপাতে নিহত হন। তার স্বজনরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে গ্রামের ক্ষেতে তিনি ট্র্যাক্টর দিয়ে হালচাষ করছিলেন।
এব্যাপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আমাদের জৈন্তাপুর প্রতিনিধি জানান, জৈন্তাপুর উপজেলায় শনিবার ঝড়বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতে নাহিদ (১৩) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার ঘন্টাদুয়েক পর দ্বিতীয় দফা ঝড়ের সাথে বজ্রপাতে আবদুল মান্নান মনাই (৪৫) নামে এক ইজিবাইক চালক নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন সরকার জানান, নিহত নাহিদ জৈন্তাপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নয়াগ্রাম আগফৌদ এলাকার নূরুল হকের ছেলে। নূরুল হক পেশায় কৃষক।
তিনি আরো বলেন, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বজ্রবৃষ্টি শুরু হয়। সেই সময় নাহিদ বাড়ি অভিমুখে রওয়ানা দিলে পথিমধ্যে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ সংলগ্ন রাস্তায় তার উপর বজ্রপাত হয়ে সে মৃত্যুবরণ করে।
অপরদিকে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য শওকত আলি জানান, বেলা আড়াইটায় দ্বিতীয় দফা ঝড়ে ভিত্রিখেল ববরবন্দ গ্রামের ইজিবাইক চালক আবদুল মান্নান মনাই (৪৫) নিহত হন। নিহত মনাই ববরবন্দ গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে। ঝড়ের সময় তিনি তার পাশ্ববর্তী লালমিয়ার বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় বজ্রপাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম পিপিএম। তিনি বলেন, বজ্রপাতে কিশোর নাহিদ ও ইজিবাইক চালক মান্নানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মৃত দুইজনের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেছে।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, দুটো ঘটনা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত দুই পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সাথে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আমাদের কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, কোম্পানীগঞ্জে হাওর থেকে হাঁস আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মো. নেজামুল হক (২১) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নেজামুল হক ওই গ্রামের ছুরফান মিয়ার ছেলে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদিউজ্জামান বজ্রপাতে নেজামুল হকের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, আমাদের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় শুকনো লাকড়ি আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দ্বীন ইসলাম (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরের উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নের সিরাজপুর চরপারা গ্রামে মারা যান তিনি। বজ্রপাতে আহত দ্বীন ইসলামকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাদাঘাট বাজারে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি দ্বীন ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউসার আলম বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে বজ্রপাতে মারা যাওয়া ব্যক্তির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।