ওয়াল নিউজ ডেস্ক
মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় হাজার হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনার পর জরুরি পরিষেবাগুলি বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার চেষ্ট করে যাচ্ছে। বিবিসি রবিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
মারাত্মক এ বন্যায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে পোল্যান্ডে একজন এবং রোমানিয়ায় চারজনের কথা জানিয়েছে দেশগুলোর গণমাধ্যম।
চেক প্রজাতন্ত্রে বন্যার কারণে অনেক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে ৫১ হাজার পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে চেক বিদ্যুৎ কম্পানি সিইজেড। এছাড়া দেশটির রাজধানী প্রাগে বন্যা প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ স্থাপন করা হয়েছে।
রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইয়োহানিস শনিবার বলেছেন, ‘আমরা আবারো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছি। ইউরোপ মহাদেশে ক্রমবর্ধমানভাবে জলবায়ুর প্রভাব দেখা দিচ্ছে এবং এর ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ হবে।’ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলে অতি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাড়ছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উষ্ণতর বায়ুমণ্ডল বেশি আর্দ্রতা ধারণ করতে পারে।
রোমানিয়ার গালাটি অঞ্চলের সেøাবোজিয়া কনাচি গ্রামের মেয়র এমিল ড্রাগোমির জানিয়েছেন, সেখানে ৭০০টি বাড়ি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তিনি এ বন্যাকে ‘এটি এক মহা বিপর্যয়’ বলেও মন্তব্য করেন।
পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওপোলের গ্লুচোলাজি শহরের মেয়র জানিয়েছেন, স্থানীয় নদীর পানি উপচে পড়ে শহর প্লাবিত হয়েছে। রবিবার বাসিন্দাদের উঁচু এলাকায় সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গ্লুচোলাজির বাসিন্দা জোফিয়া ওউসিয়াকা জানান, শহরের সবাই আতঙ্কিত। বৃষ্টি থামার কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক লোয়ার সিলেসিয়ার ক্লোডজকো শহর পরিদর্শনে গিয়ে জানিয়েছেন, চেক সীমান্তের কাছাকাছি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে ১, ৬০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বাসিন্দাদের ঘর বাড়ি খালি করে জরুরি পরিষেবাকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।
এলাকায় ১৭ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন এবং কিছু স্থানে মোবাইল সিগনাল ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী টাস্ক স্টারলিংক স্যাটেলাইট ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ফাস্ট ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টার ইতোমধ্যে অঞ্চলটির রাজধানী রক্লোতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার বাসিন্দা লিফট বন্ধ থাকার কারণে সিঁড়ি ব্যবহার করে উঁচু ভবনগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
চেক প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ বোহেমিয়া অঞ্চলে শনিবার একটি বাঁধ ভেঙে বন্যা দেখা দিয়েছে। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রী পেট্র হ্লাদিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছাড়ার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
হ্লাদিক বলেন, মাটি সম্পূর্ণরূপে স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে এবং বৃষ্টির পানি জমা থাকায় হঠাৎ বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রে বৃষ্টি মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চেক প্রধানমন্ত্রী পেট্র ফিয়ালা বলেছেন, দেশটি ‘কঠিন একটি সপ্তাহের’ মুখোমুখি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বালির বস্তা ও ধাতব বাধ দিয়ে প্রতিরক্ষামূলক প্রাচীর তৈরি করেছে। দেশের শীর্ষ দুটি ফুটবল লিগের এই সপ্তাহের নির্ধারিত ম্যাচগুলো বাতিল করা হয়েছে বলেও গণমাধ্যম জানিয়েছে।
প্রধান সম্পাদক: জাকেরিন চৌধুরী জয়
অফিস: ১০৪/১১ নূরানী বনকলাপাড়া,
সুবিদ বাজার সিলেট।
মোবাইল : ০১৬০১০৩৮৪৮১, Email: thewallnews181@gmail.com