ওয়াল নিউজ ডেস্ক
দুপুর আড়াইটার দিকে বিসিবিতে এলেন তামিম ইকবাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাকে দেখা যাচ্ছে না এক বছর হতে চলল। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তিনি এখন আর নিয়মিত মুখ নন। তার আগমন তাই বেশ কৌতূহলের জন্ম দিল। সম্প্রতি পাকিস্তানে সিরিজ জয় করে আসা ক্রিকেটাররা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে বিসিবিতে এলেন আরও ঘণ্টাখানেক পর। ততক্ষণে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও চলে এসেছেন।
তামিমের বিসিবিতে আসার কারণ বোঝা গেল একটু পর। ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবি সভাপতির যে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক, সেখানে ছিলেন সাবেক এই অধিনায়কও।
বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে তামিম নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন অনেক দিন আগেই। জাতীয় দল থেকেও তিনি এখনও অনেক দূরে। এই সভায় তার উপস্থিতি তাই বাড়তি কৌতূহলের উৎস অবশ্যই।
আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ ব্যাপারটি খোলাসা করেননি। তবে সভায় থাকা জনা তিনেক ক্রিকেটার ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিসিবি কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা গেল, ক্রিকেটারদের অনুরোধেই তাদের সঙ্গী হয়েছিলেন তামিম। এই সভা শুধু জাতীয় দল সংক্রান্ত ছিল না। মূলত বিপিএলসহ অন্যান্য ঘরোয়া আসরগুলির আয়োজনের নিশ্চয়তা পেতেই বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন ক্রিকেটাররা। দেশের সিনিয়র একজন ক্রিকেটার হিসেবে তামিমকেও নিজেদের পাশে চেয়েছিলেন ক্রিকেটাররা।
এই সভার যে ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছে বিসিবি, সেখানে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও তামিম ছাড়াও দেখা গেছে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মুমিনুল হক, তাসকিন আহমেদ, লিটন কুমার দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ও তাওহিদ হৃদয়।
গত মাসে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্রিকেটারদের সঙ্গে ফারুক আহমেদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল এটিই। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ ও বিসিবির পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিপিএলসহ দেশের অন্যান্য সব ঘরোয়া টুর্নামেন্টের সামনে অনেক প্রশ্নবোধক চিহ্ন আছে। বিসিবি থেকে যদিও কোনো অনিশ্চয়তার কথা গত এক মাসে বলা হয়নি, তবু সার্বিক পরিস্থিতিতে একটা শঙ্কার জায়গা থাকেই।
কেন্দ্রীয় চুক্তি ও জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা ক্রিকেটারদের বাইরেও বিশাল একটি অংশের ক্রিকেটারদের জীবিকা নির্ভর করে এসব টুর্নামেন্টের ওপর। দুর্ভাবনায় থাকা সেসব ক্রিকেটারের প্রতিনিধি হয়েই গিয়েছিলেন ওই ক্রিকেটাররা।
সভায় থাকা এক ক্রিকেটার যেমন বললেন, আর্থিক নিশ্চয়তার ব্যাপারটি বোর্ড প্রধানকে জানিয়েছেন তারা।
“আমরা যারা জাতীয় দলে খেলি, তাদের হয়তো ভাবনা অতটা নেই। তবে অন্য অনেক ক্রিকেটার সত্যিকার অর্থেই কিছুটা ভয়ে আছে। ক্রিকেট মৌসুম শুরু হয়ে যাচ্ছে। টুর্নামেন্টগুলি ঠিকঠাক হবে কি না… বিশেষ করে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে বড় শঙ্কায় আছে অনেকেই।”
“ঢাকা লিগে এবার টাকা অনেক কম পাওয়া যাবে নিশ্চিতভাবেই। বিপিএলের টাকা অন্তত সময়মতো ও পুরোপুরি যাতে সব ক্রিকেটার পায়, এটা নিশ্চিত করতে বলেছি আমরা। সভাপতি আশ্বাস দিয়েছেন যে, তারা খেলা চালাবেন অবশ্যই এবং টাকাও ঠিকঠাক পাওয়া যাবে।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দীর্ঘ সেই সভা শেষে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানালেন, সুনির্দিষ্ট কোনো দাবী-দাওয়া জানাতে হয়, বরং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন ক্রিকেটাররা।
“দেশের পরিস্থিতি তো আপনারা সবাই জানেন। ওরাও (ক্রিকেটাররা) দেশের বাইরের কেউ নয়। খেলা নিয়ে সবার একটা দুশ্চিন্তা ছিল। তাই বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, এসব নিয়ে কথা বলেছে। আমরা ওদেরকে আশ্বস্ত করেছি যে ভয়ের কিছু নেই।”
এই মাসের শেষ দিকে বিপিএলের ড্রাফট হবে বলে আগে জানিয়েছিল বিসিবি। এখনও পর্যন্ত দলগুলির সঙ্গে আলোচনা শেষ করা যায়নি, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও নিশ্চিত করা যায়নি। তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও জোর দিয়ে বললেন, এই মাসের শেষেই ড্রাফট হবে।
প্রধান সম্পাদক: জাকেরিন চৌধুরী জয়
অফিস: ১০৪/১১ নূরানী বনকলাপাড়া,
সুবিদ বাজার সিলেট।
মোবাইল : ০১৬০১০৩৮৪৮১, Email: thewallnews181@gmail.com