ওয়াল নিউজ ডেস্ক
কয়েকদিন ধরেই মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে সিলেটে। তীব্র গরমে হাসফাস করছেন সিলেটবাসী। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং কষ্ট বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ। গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এ অবস্থায় তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামারও হুশিয়ারি দিয়েছেন।
কয়েকদিন ধরেই সিলেটে বিদ্যুতের শোডশেডিং মারাত্মকভাবে বেড়েছে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা হচ্ছে লোডশেডিং। অধিক চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন কম হওয়ার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সহসাই এ সমস্যার সমাধানও দেখছেন না তারা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেট জোনে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৯০ দশমিক ৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হয়েছে ১৩৬ দশমিক ৮৫ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় ২৮ দশমিক ২০ শতাংশ কম বিদ্যুৎ পেয়েছে সিলেট জোন।
বিষয়টি সমাধানের জন্য মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগের একটি অভ্যন্তরীণ সভা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবু হোসাইন। ওই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিলেটের বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থা কেন্দ্রে জানানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
যদিও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, সরকার এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে কিছুটা সময় লাগবে।
এদিকে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হলে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। সোমবার যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখা, সিলেট মহানগর ও জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের নেতৃবৃন্দ এই ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে ব্যবসায়ীরা বলেন, সিলেটে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর লোডশেডিংয়ের কারণে প্রভাব পড়ছে ব্যবসা বাণিজ্যে। ব্যবসায় মূল আকর্ষণ হলো ক্রেতা। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে ক্রেতা আসছেন না মার্কেটে। এতে করে ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
তারা বলেন, সিলেট বিভাগে ১৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও পুরো বিভাগের ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে মারাত্মক বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছেন সিলেটবাসী। সিলেটবাসীর প্রতি এরকম চরম বৈষম্য বন্ধ করতে হবে। সিলেটে সর্বনিম্ন বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে হবে। অবিলম্বে সিলেটে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হলে ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবেন। প্রয়োজনে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করা হবে। এতে করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা এড়াতে অবিলম্বে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখার মহাসচিব ও সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন, দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি আব্দুল মুনিম মল্লিক মুন্না, আবুল হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল হাদী পাবেল, আব্দুর রহমান দুদু, মারুফ আহমদ, মনিরুল ইসলাম, হোসেন আহমদ, মো. আব্দুস সোবহান, সাংগঠনিক সচিব নিয়াজ মো. আজিজুল করিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম, কোষাধ্যক্ষ মো. নাহিদুর রহমান, প্রচার সচিব তাহমিদুল হাসান জাবেদ এবং জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সহ-সভাপতি মুফতি নেহাল উদ্দিন, শাহ আহমেদুর রব, নুরুল ইসলাম সুমন, মো. ছাদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আহাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আলেক মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান সুহেদ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।