ওয়াল নিউজ ডেস্ক
মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোনে ও লোকজন পাঠিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শ্রীমঙ্গল থানায় জিডি করেছেন বাদশা মিয়া কাজল নামের এক বিএনপি নেতা। মঙ্গলবার জিডি করেন তিনি।
বাদশা মিয়া কাজল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের সিরাজনগর এলাকার শেখ আব্দুল বারিকের ছেলে ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি।
জানা গেছে, মার্কিন বহুজাতিক তেল গ্যাস কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশের কাছ থেকে কালাপুর এলাকায় একটি কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডকে নিযুক্ত করে। গত ১৯ আগস্ট তারা সাব ঠিকাদার হিসেবে বাদশা এন্টারপ্রাইজ নামের স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের জন্য চুক্তি করেন।
বাদশা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাদশা মিয়া কাজল থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন, গত ১৯ আগস্ট মৌলভীবাজার গ্যাস ফিল্ড এমবি-৯ ও এমবি-৫ এর মীর আক্তার কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সাব-কন্ট্রাক্টে একটি কাজের চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করি। কাজ পাওয়ার পর ২২ আগস্ট বিকাল ৫টা ২০ থেকে ৫টা ২৫ মিনিটের মধ্যে একটি নম্বর থেকে কল করে মৌলভীবাজার জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে কাজটি উনি করবেন বলে জানান। আমি ওনাকে অনুরোধ করার জন্য কল করলে উনি আমার কল আর রিসিভ করেননি। পরে উনি আমার সঙ্গে চুক্তিনামায় স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মান্নানের সঙ্গে কথা বলে আমাকে কাজ না দেওয়ার জন্য বলেন। এছাড়া উনি লোক পাঠিয়ে কোম্পানির ওই কর্মকর্তাকে বারবার নিষেধ করেন এবং শ্রীমঙ্গল শহরের ওনার নিজস্ব লোক দিয়ে আমাকে হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। আমি একজন ব্যবসায়ী। আমি বিএনপির সক্রিয় কর্মী এবং দীর্ঘদিন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। বর্তমানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি।
জিডিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, নিরুপায় হয়ে বিষয়টি তিনি মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরীকে জানান। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।
বাদশা মিয়া বলেন, আমরা সুবিচারের জন্য বিএনপি সিনিয়র নেতাদেরকে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েছি। পাশাপাশি চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল মান্নান বলেন, কাকিয়ার বাজার এলাকায় আমাদের যে প্রজেক্ট রয়েছে, সেটা আমরা বাদশা এন্টাপ্রাইজকে সাব কন্ট্রাক্ট হিসেবে কাজ দেই। এর আগেও তারা আমাদের কাজ করেছে। আমরা সাধারণত লোকাল কমিউনিটিকে জড়িত করি কাজের জন্য। জাকির হোসেন একজন আমাকে কল দিয়ে ওনার দলীয় পরিচয় দিয়ে কাজটি ওনাকে দেওয়ার জন্য বলেন। এছাড়া কাজটি হোল্ড করে রাখতে অনুরোধ করেন। আমি তখন ওনাকে বলি, আমরাতো কাজ দিয়ে দিছি, আপনি এখন করতে হলে ওনাদের সাথে কথা বলতে হবে। তখন উনি আমাকে বলেন, আপনি কার সঙ্গে কথা বলতেছেন আপনি কি বুঝতেছেন? আপনি কাজ হোল্ড করে রাখুন।
তিনি আরও বলেন, এরপর উনি দুইজন লোক আমাদের কাছে পাঠান। এর মধ্যে বকুল নামের একজন ছিলেন। তাদের কথাবার্তার টিউন ভালো ছিল না। এরপর জাকির হোসেন আমাকে কয়েক দফা কথা বলেছেন। ওনার কথা রাফ না হলেও ওই দুইজনের কথাবার্তা ভালো ছিল না বলে যোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জাকির হোসেন উজ্জ্বলের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কড়া নির্দেশনা, দলের কেউ যেন বিশৃঙ্খলা না করেন। আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং দলের কেন্দ্রীয় অফিসে পাঠিয়েছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মাহমুদ বলেন, থানায় জিডি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি।