• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আবারও চুনা পাথর আমদানি শুরু

The Wall News.Com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪
তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আবারও চুনা পাথর আমদানি শুরু

ওয়াল নিউজ ডেস্ক


দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় ধরে তামাবিল স্থলবন্দরে বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হলো চুনাপাথর আমদানি। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বস্তি।
৫ আগষ্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর তামাবিল কয়লা, চুনাপাথর আমদানি রপ্তানি কারক ব্যবসায়ী গ্রুপের দীর্ঘদিনের নির্বাচনবিহীন কমিটিকে নানান দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত করে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। সে সময় ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি এম লিয়াকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার হোসেন ছেদুর নেতৃত্বাধীন কমিটির উপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিলো সাধারণ ব্যবসায়ীদের। সাবেক কমিটি শীর্ষ নেতাদের মাধ্যমে সাধারণ ব্যবসায়ীদের হয়রানি, শ্রমিক হ্যান্ডেলিং এর নামে অবৈধ চাঁদাবাজীসহ ব্যবসায়ী সংগঠন গ্রুপের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে।
৫ আগষ্ট সরকার পতনের দিনে সাধারণ ব্যবসায়ীরা তামাবিল কয়লা চুনাপাথর আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপের কমিটিকে বিলুপ্ত করে অফিস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন তারা। পরের সপ্তাহে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন ও বন্দরের আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জনপ্রতিনিধি, গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়।
পরবর্তীতে আমদানি জটিলতা নিরোসনের পূর্বে একটি ব্যবসায়ী কমিটির নাম আত্মপ্রকাশ করলে শুরু হয় নতুন করে জটিলতা। এর ১২ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই একে একে পাল্টা আরো দুইটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। এ সময় অভিযোগ উঠে সাবেক কমিটির ক্ষমতাচ্যুত নেতৃবৃন্দ কৌশলে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করছে। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় তীব্র আলোচনা সমালোচনা।
এতে করে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীদের ঐক্য। অনিশ্চিত হয়ে যায় পাথর আমদানি। যার ফলে ব্যবসা বন্ধের পাশাপাশি, পাথর সংশ্লিষ্ট মিল কারখানা শতভাগ বন্ধ সহ বেকার হয়ে পড়ে কয়েক হাজার স্থলবন্দর ও ক্রাশারমিলের পাথর শ্রমিক।
উদ্বুদ্ধ এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে জরুরি বৈঠক আহবান করে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। সেই বৈঠকে সাধারণ ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা পরিষদ ব্যবসায়ী হেনরী লামিনকে প্রধান সমন্বয়ক করে তামাবিলে পাথর আমাদানি স্বাভাবিক করার দায়িত্ব অর্পন করেন। পরে ৩ সেপ্টেম্বর মিস্টার হেনরী লামিনের নেতৃত্বে সাধারণ ব্যবসায়ীরা মেঘালয়ের ব্যবসায়ীদের নিয়ে তামাবিল ডাউকি জিরো পয়েন্টে একটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে পরিস্থিতি আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। অবশেষে দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের ঐক্যমতে চুনাপাথর আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার ডাউকি হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তামাবিল স্থলবন্দরে দুপুর সোয়া ১টা চুনাপাথর বোঝাই ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করে।
এদিকে, দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় পাথর আমদানি বন্ধের পর পুনারায় শুরুতে স্বস্তি ফিরে এসেছে শ্রমিকদের মধ্য। তামাবিল পাথর কয়লা শ্রমিক সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে যে হতাশা ছিলো তা কেটে গেছে। আশাকরি সম্মানিত ব্যবসায়ীদের ঐক্যমতে তামাবিলে ব্যবসায়ীবান্ধব পরিবেশ বজায় থাজবে।
এ বিষয়ে তামাবিল স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আবুল হাসিম বলেন, আজ থেকে তামাবিল আওয়ামী সিন্ডিকেট দালালমুক্ত হলো। এখন থেকে তামাবিলে শুধু ব্যবসা ও ব্যাবসায়ীদের প্রধান্য দেয়া হবে। এখানে থাকবে না কোন চাঁদাবাজি।