টাকার জন্য স্বামী-স্ত্রী মিলে অংশ নেন ‘কিলিং মিশনে’!
ওয়াল নিউজ ডেস্ক
সিলেটের ওসমানীনগরে নিখোঁজের ৪ দিন পর বন্তাবন্দি অর্ধ গলিত আব্দুল জলিলে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম মামলাটি দায়ের করেন। লাশ উদ্ধারের পরই ঘটনার রহস্য উন্মুচন করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, উপজেলার ভাড়েরা গ্রামের মৃত আনহার মিয়ার ছেলে কামরান আহমদ (২৮), কাদিপুর গ্রামের তছিম মিয়ার ছেলে ছালেহ মিয়া (২৫), তার স্ত্রী তামান্না আক্তার মাইশা (২০)। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত জহির উল্যার ছেলে আব্দুল জলিল গত রবিবার বিকালে স্বর্ণ ক্রয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। আত্মীয় স্বজনসহ সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ করেও তার কোন সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়রী করা হয়। এসময় সন্দেহজনক কামরান আহমদ, সালেহ মিয়া ও তামান্নাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
জিজ্ঞসাবাদে তারা পুলিশকে জানায়, ঘটনার দিন রাতেই তারাসহ আরো কয়েকজন মিলে আব্দুল জলিলকে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাজপুর বাজারস্থ কামরান আহমদের মুদি দোকান থেকে স্বর্ণ বিক্রয়ের কথা বলে কৌশলে অপহরণ করে কাদিপুর গ্রামের ছালেহ মিয়া ও তামান্না আক্তার মাইশাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুল জলিলকে ধারালো চাকু দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে লাশ গুম করার পরিকল্পনা করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি পাটের বস্তা ও রশি সংগ্রহ করা হয়। পরে গভীর রাতে পার্শবর্তী মৃত আবরুছ মিয়ার বাড়ীর পূর্ব দক্ষিণ পাশে পরিত্যাক্ত সেফটিক ট্যাংকে রেখে স্লেব দিয়ে আটকে রাখা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য মতে বুধবার দুপুরে পুলিশ। ঐস্থান থেকে আব্দুল জলিলের লাশ উদ্ধার করে। লাশের গায়ে একাধিক স্থানে ধারলো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী ছালেহ মিয়া ও আসামী তামান্না আক্তারের দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদের বসতঘর থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু এবং আব্দুল জলিলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্য রাসেদুল হক বলেন, আব্দুল জলিল হত্যাকান্ডে তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের আবরুছ মিয়ার পরিত্যাক্ত সেফটিক ট্যাংকি থেকে বস্তা বন্দি ও রশি দিয়ে বাধা অবস্তায় আব্দুল জলিল (৪৬) এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে আব্দুল জলিল নিখোঁজ ছিলেন।